বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিপন্ন সেন্টমার্টিন

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২২-০২-২৮ ১২:২১:১৩  

অনিয়ন্ত্রিত পর্যটক, অপরিকল্পিত স্থাপনাসহ নানা কারণে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। গত কয়েক দশকে এ দ্বীপের যে ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও দ্বীপটি রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না। জানা গেছে, প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক এই দ্বীপে ভ্রমণ করেন। তাদের কেন্দ্র করে দ্বীপের চারপাশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে স্থাপনা তৈরির হিড়িক পড়েছে। যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে, সেহেতু সেন্টমার্টিন দ্বীপ একসময় সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। এ অবস্থায় পর্যটক ও স্থানীয়রা সচেতনতার পরিচয় না দিলে দ্বীপটি আরও দ্রুত হারিয়ে যাবে, যা বলাই বাহুল্য।

বস্তুত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ সমুদ্র দেখতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার যায়। এসব পর্যটকের একটি বড় অংশ সেন্টমার্টিনেও যেতে আগ্রহী। তাদের অনেকেই সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের বিধিনিষেধ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। ভ্রমণের জাহাজ থাকায় পর্যটকরা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার যাওয়ার পর দলে দলে সেন্টমার্টিনে গিয়ে হাজির হচ্ছেন। এ অবস্থায় সেন্টমার্টিনগামী জাহাজের সংখ্যা এবং যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি বলে মনে করি আমরা। তা না হলে পর্যটকদের ফেলে দেওয়া আবর্জনাসহ বিভিন্ন বর্জ্যে অচিরেই দ্বীপটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

জানা যায়, অতিরিক্ত উত্তোলনের ফলে দ্বীপের ভূগর্ভস্থ সুপেয় মিঠা পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে কিছু কিছু নলকূপে উঠছে লবণাক্ত পানি। সৈকতে জনকোলাহল, পানিতে অতিরিক্ত দূষণের কারণে বহু উদ্ভিদ ও প্রাণী এরই মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। সবচেয়ে হুমকির মুখে রয়েছে কাছিম। উল্লেখ্য, দ্বীপটি সামুদ্রিক কাছিমের প্রজনন ক্ষেত্র। জানা গেছে, এককালে এই দ্বীপ এবং এর আশপাশের এলাকায় দুই শতাধিক প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের বিচরণ ক্ষেত্র ছিল। এককালে এ দ্বীপে বহু প্রজাতির প্রবাল, শৈবালসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী থাকলেও পরিবেশগত কারণে এসব প্রজাতির অনেকই এখন বিলুপ্তির পথে। দূষণসহ যেসব কারণে এ দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে, কর্তৃপক্ষ সে সম্পর্কে অবগত। কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে বহু পদক্ষেপ নিলেও তা যথেষ্ট নয়। বস্তুত কিছু মানুষ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের লোভের কারণে এ দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। কাজেই শুধু ঘোষণা প্রদানের মধ্য দিয়ে যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না, তা বলাই বাহুল্য। সেন্টমার্টিনের পরিবেশ যেভাবে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে, দ্বীপটি রক্ষা করতে দ্রুত নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ।

সূত্রঃ যুগান্তর


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা