বাংলাদেশ, , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশনে যা থাকছে

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২৩-১১-১১ ১৯:৪৫:৩৪  

আবদুল্লাহ আল মামুন:

অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের যাত্রা শুরু হলো। শনিবার দুপুরে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে এই রেলপথের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।একই সঙ্গে কক্সবাজারে দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।

বঙ্গোপসাগরের তীরে গড়ে ওঠা শহর কক্সবাজারের সঙ্গে সারা দেশের বহুল প্রতীক্ষিত এই রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কথা দিয়েছিলাম, কথা রাখলাম। রেল যোগাযোগের মাধ্যমে পর্যটন নগরী কক্সবাজার সারা দেশের সঙ্গে যুক্ত হলো।প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু রাজধানী ঢাকা থেকে নয়, আগামীতে যেন সব বিভাগ থেকে পর্যটকরা রেলে কক্সবাজারে আসতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হবে।

দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশনে যা থাকছে: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়াতে ২৯ একর জমিতে নির্মিত হয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুটের দৃষ্টিনন্দন ছয়তলা ভবনের এই রেল স্টেশন। যেখানে রয়েছে পাঁচ তারকা মানের হোটেল, শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, শিশুযত্ন কেন্দ্র, পোস্ট অফিস, কনভেনশন সেন্টার, ইনফরমেশন বুথ, এটিএম বুথ, মসজিদ, লাগেজ রাখার লকারসহ অত্যাধুনিক সব সুবিধা। যা ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। উদ্বোধনের অনেক আগেই পর্যটকরা ঘুরে গেছেন আইকনিক এই রেল স্টেশন।

আক্ষরিক অর্থে ঝিনুক না হলেও সমুদ্র দেখতে এসে প্রথম দর্শনেই সামুদ্রিক আবহ পাওয়া যাবে গোটা স্টেশনে। কেবল আসা-যাওয়ার জন্যই হয়নি এই স্টেশন, দৃষ্টিনন্দন করতে দেওয়া হয়েছে এর বহুমাত্রিক রূপও। নান্দনিক ডিজাইন আর নির্মাণ শৈলীর পাশাপাশি বহুমাত্রিক পরিধি নিয়ে গড়ে ওঠা এই স্টেশন তাই পরিণত হয়েছে দর্শনার্থীদের বিনোদনের নতুন গন্তব্য।

সরেজমিন দেখা যায়, চোখ ধাঁধানো আইকনিক স্টেশনটির সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে চারপাশে ব্যবহার হয়েছে কাঁচ। ছাদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক স্টিল ক্যানোফি। ফলে দিনের বেলা বাড়তি আলো ব্যবহার করতে হবে না স্টেশনে। আর এই আধুনিক নির্মাণ শৈলীর কারণেই একে বলা হচ্ছে গ্রিন স্টেশন।

একই সঙ্গে সুবিশাল চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতলা থেকে নামতে হবে ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে। আর আসার যাত্রীরা বের হবেন নিচ থেকে। যার জন্য রয়েছে ৪টি চলন্ত সিঁড়ি। স্টেশনের ভেতরেই রয়েছে ৭টি টিকিট কাউন্টার। পর্যটকরা চাইলেই নির্দিষ্ট লকারে তার ব্যাগ রেখে ঘুরে আসতে পারবেন পুরো কক্সবাজার শহর।

এই আইকনিক স্টেশনের স্থপতি মো.ফয়েজ উল্লাহ বলেন, কক্সবাজার রেলস্টেশন ডিজাইন করার সময় একটা অনুপ্রেরণা নিই। ঝিনুক ও শামুকের গঠনটা বাইরে থাকে, আর বাকি শরীরের অংশটুকু ভেতরে আবৃত থাকে। আমরা সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে পুরো রেলস্টেশনটাকে একটা ছাউনি দিয়ে ঢেকে দিয়েছি।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড দুই ভাগে কাজ করছে। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে আইকনিক রেলস্টেশন নির্মাণের বিপরীতে খরচ হচ্ছে ২১৫ কোটি টাকা। রেলপথ ও রেল স্টেশনের আরও কিছু কাজ এখনো বাকি আছে।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা