বাংলাদেশ, , বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

‘সীমাবদ্ধতা’ কাটিয়ে ৬ বছরে ভিত্তি মজবুত করল ‘কউক’, নতুন ভবন উদ্বোধন ১৮ মে

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২২-০৫-১৭ ১২:৫৫:১৫  

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সরকারের মহাপরিকল্পনাকে ঘিরে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক)। সে সময় ছিল না স্থায়ী কোন কার্যালয়, ছিল না স্থায়ী জনবল। মাত্র ১টি প্লাস্টিকের টেবিল ও ২টি চেয়ার নিয়ে শুরু হয় অফিসিয়াল কাজ। কিন্তু নানা সংকট—সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে ৬ বছরে সেই কউকের ভিত্তি এখন মজবুত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

আগামি বুধবার (১৮ মে) কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১০ তলাবিশিষ্ট আধুনিক ‘কউক ভবনে’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।

আজ সোমবার (১৬ মে) দুপুর ১২টায় কউক ভবনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানিয়েছেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্টাকালিন থেকে এই সময়কালিন চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ।

কউক সুত্র মতে, ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভায় কউকের অফিস ভবন নির্মানের জন্য ১.২১ একর জমি বরাদ্দ করা হয়। ১১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দে ওই বছরের ৬ মে এই ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই। এর মধ্যে ২০২০ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি আরও ২ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়। যা ২০২১ সালে এসে শেষ হয়েছে।

কিন্তু ১১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দে নির্মাণ কাজ শেষে রয়ে গেছে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রীতিমতো সরকারের কাছে এই অর্থ ফেরতও দিয়েছে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, যা কক্সবাজারের ইতিহাসে বিরল বলে মনে করা হচ্ছে।

যা আছে নতুন ভবনে
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, ভবনটির একদম বেইজম্যান্ড গ্র্যাউন্ড ফ্লোর ২২ হাজার ২৫ স্কয়ার ফিট, গ্রাউন্ড ফ্লোর ১৬ হাজার স্কয়ার ফিট, প্রথম ফ্লোর ২০ হাজার ৮৮২ স্কয়ার ফিট, দ্বিতীয় ফ্লোর ১৬ হাজার ৭৭ স্কয়ার ফিট, তৃতীয় ফ্লোর ১৯ হাজার ৫৩১ স্কয়ার ফিটসহ সর্বমোট ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮১ স্কয়ার ফিট।

এর মধ্যে রয়েছে মাল্টিপারপাস হল, ওয়াটার হারভেস্টিং, সোলার সিস্টেম, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, রেস্ট হাউজ, ওয়াইফাই জোন, রেস্টুরেন্ট, সিসি ক্যামেরাসহ সবধরনের অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ বলেন, ‘ভবনটি নির্মাণকালীন সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্মকর্তা—কর্মচারী বদলী হয়েছেন। কিন্তু এতে নির্মাণ কাজের কোন জটিলতা সৃষ্টি হয়নি। তাছাড়া কাজের গুণগতমান এবং সকল কর্মকর্তারা আমাদের নজরদারিতে ছিল। এ কারণে কোন অনিয়ম ঘটেনি, টাকাও সাশ্রয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ভিত্তিপ্রস্তর করে নিজেই উদ্বোধন করবেন এটিই আমার বড় প্রাপ্তি।’

লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদের ভাষ্য, ‘২০১৬ সালে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের পর থেকেই কক্সবাজারকে একটি আধুনিক—রুচিশীল পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীতায় সেভাবে এগোয়নি। এখন সেই সমস্যা কাটিয়ে নতুনভাবে কাজ শুরু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারে সমুদ্রসৈকতের ৭০.০৬ একর জায়গাকে সংরক্ষিত অঞ্চল ঘোষণা করে সেটিকেই মহাপরিকল্পনার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে, যার গেজেটও হয়ে গেছে।’

‘বিশাল এই সৈকতকে ছোট ছোট এলাকায় ভাগ করে আধুনিক করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। আর বাঁকখালী নদীর চার পাশ হাতিরঝিলের আাদলে তৈরি করা হবে। গড়ে তোলা হবে নতুন নতুন আধুনিক শহর।’ জানালেন কউক চেয়ারম্যান।

দেশি—বিদেশি পর্যটকরা যাতে আনন্দময় সময় কাটাতে পারেন, সে জন্য উন্নত দেশের সৈকত এলাকায় যে যে সুবিধা আছে, তার সবই কক্সবাজারে রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

কউক চেয়ারম্যান ফোরকান আহমদ বলেন, এতো সবের মাঝে আমার বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে চলেছে। যেটি এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অফিস ভবন।

তিনি বলেন, ‘যেখানে আড়াই শতাধিক জনবল দরকার সেখানে বর্তমানে আছে অর্ধ—শতাধিক। বাকিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এখন অফিস ভবন হয়েছে। আগামীতে ‘দেশি—বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য সরকারের কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়বে না; বরং আয় হবে। সরকার শুধু নিয়ন্ত্রণ করবে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৬ জুলাই কক্সবাজারকে একটি আধুনিক ও পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জাতীয় সংসদে ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিল—২০১৫’ পাশ হয়। ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদকে নিয়োগ দেয় সরকার। এরপর ১৪ আগস্ট তিনি যোগদান করেন। টানা তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন ফোরকান আহমদ।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা