বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোটার তালিকায় মৃত, লড়তে চান নির্বাচনে

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-১০-১৭ ২৩:০৬:৩৭  

বগুড়ার সোনাতলা পৌরসভার এক কাউন্সিলর প্রার্থীর পর শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী আবদুল মোতালেব ফেরদৌস ভোটার তালিকায় মৃত। ফলে তার নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না।

নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, যে কোনো ভুলের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। আবেদন করলে সংশোধন করা হবে; তবে এবার তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

এতে প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার স্বপ্ন ভণ্ডুল হয়ে গেছে। জনগণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, আবদুল মোতালেব ফেরদৌস শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকদিবা বিন্নাচাপড় গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে। তিনি ওই ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। তৃতীয় ধাপে আগামী ২৮ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হবে। এ ওয়ার্ডে বর্তমান সদস্য আবদুর রহমান, আবদুল বাসেদ রঞ্জু ও সাবেক সদস্য ফেরদৌস প্রার্থী হওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। ফেরদৌস গত নির্বাচনে আবদুর রহমানের কাছে ১৪৫ ভোটে পরাজিত হন।

আবদুল মোতালেব ফেরদৌসের ছেলে রাসেল আহমেদ জানান, তার বাবা এবারো প্রার্থী হবেন; তাই অনেকদিন ধরেই মাঠে রয়েছেন। প্রস্তুতি হিসেবে কোভিড-১৯ টিকার অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও ভোটার তালিকায় খোঁজ করে দেখেন তার বাবার নাম নেই। পরে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাকে মৃত দেখানো হয়েছে।

প্রার্থী সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মোতালেব ফেরদৌস বাংলাদেশ পেপারের এই প্রতিনিধিকে বলেন, তিনি জীবিত থাকলেও নির্বাচন অফিস তাকে মৃত বানিয়েছে। তিনি গত নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। এবার অংশ নেওয়ার জন্য অনেক দিন ধরেই মাঠে থেকে জনসেবামূলক কাজ করে আসছেন। তার ধারণা, জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে প্রতিপক্ষের কেউ তাকে মৃত বানিয়েছে। এরপরও তাকে জীবিত দেখাতে নির্বাচন অফিসে আবেদন করেছেন।

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, যদি কোনো ভোটার মারা যান তাহলে পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নির্বাচন অফিসকে অবহিত করতে হয়। পরে একজন মাঠকর্মী তদন্ত করে এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন। ওই মাঠকর্মীর যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া মৃত্যুর কারণে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে হলেও ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু সনদ লাগে।

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল হোসেন ফোন না ধরায় ও বন্ধ করে দেওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তিনি অন্য সাংবাদিকদের বলেছেন, এমন হওয়ার কথা নয়; বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

অন্যদিকে সোনাতলা পৌরসভার নির্বাচন আগামী ২ নভেম্বর। ৪ অক্টোবর মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অনেক দিন ধরে প্রস্তুতি নেন চরমগাছা গ্রামের মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবুল কাশেম শেখ। তার জাতীয়পত্রও আছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে গিয়ে জানাতে পারেন ডাটাবেজে তার নাম নেই।

অনেক খোঁজ করার পর জানা গেল তিনি ১০ বছর আগে অর্থাৎ ২০১১ সালে মারা গেছেন। নির্বাচন অফিস থেকে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এবার তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না।

আবুল কাশেম শেখ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বেঁচে থাকলেও নির্বাচন অফিস তাকে মৃত বানিয়েছে। ফলে এবারের নির্বাচন অংশ নিতে পারছেন না। কবে তাকে জীবিত দেখানো হবে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে সোনাতলা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন বাংলাদেশ পেপারকে জানান, যে কোনো ভুলের কারণেই হোক এ সমস্যা হয়েছে। সংশোধনের আবেদন করলে সমাধান করা হবে। তবে তিনি এবার ভোটে অংশ নিতে বা ভোট দিতে পারবেন না। দুটি ঘটনায় জনগণের মাঝে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের অজ্ঞতা, অবহেলা বা ভুলের কারণে দুজন ব্যক্তি ভোট দিতে বা নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যর্থ হলেন। তারা ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা