বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রান্নাঘর ছেড়ে নির্বাচনী মাঠে বউ-শাশুড়ির যুদ্ধ

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-০২-১৬ ২৩:৫১:০৪  

আসন্ন বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে ৪ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে লড়াইয়ে নেমেছেন শাশুড়ি খোদেজা বেগম ও ছেলে বউ রেবেকা সুলতানা লিমা।

পারিবারিক মান-অভিমান থেকে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এতে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তারা দুজনই ভোটের জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। দুজনই জয়লাভের ব্যাপারে আশাবাদী।

জানা গেছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ইভিএম পদ্ধতিতে বগুড়া পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হবে। ২১টি ওয়ার্ড সম্বলিত পৌরসভায় মেয়র পদে চারজন, ২১ সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩০ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরের সাত পদে ৫০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা মাঠে নেমে পড়েছেন।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আবু ওবায়দুল হাসান ববি নৌকা, বিএনপির রেজাউল করিম বাদশা ধানের শীষ, ইসলামী আন্দোলনের আবদুল মতিন হাতপাখা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান আকন্দ জগ প্রতীক পেয়েছেন। পুরো পৌর এলাকায় ব্যাপক প্রচারণা শুরু হয়েছে। পোস্টারে পোস্টারে এলাকা ছেয়ে গেছে। প্রার্থী ও তাদের লোকজন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন।

বগুড়া পৌরসভার ৪ নম্বর সংরক্ষিত আসনে (ওয়ার্ড নম্বর ১০, ১১ ও ১২) সাতজন প্রার্থীর মধ্যে শাশুড়ি বর্তমান কাউন্সিলর খোদেজা বেগম ও বড়ছেলে আলমগীর হোসেনের বউ রেবেকা সুলতানা লিমা। তাদের প্রার্থিতা নিয়ে এলাকার ভোটারদের মাঝে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের কারণে পরিবারের সদস্যরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন।

খোদেজা বেগমের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলের বউয়ের পক্ষ নিয়েছেন ছোট মেয়ে নাজমা আর শাশুড়ির পক্ষে আছেন ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও বড় মেয়ে আসমা। খোদেজা বেগম ওই ওয়ার্ডে পরপর দুই বার বিএনপির সমর্থন ও তৃতীয়বার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

বিএনপি তাকে সমর্থন না দেওয়ায় এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। খোদেজা বেগম পেয়েছেন, জবাফুল ও বউ লিমা পেয়েছেন চশমা প্রতীক।

প্রার্থিতা নিয়ে বড় ছেলে আলমগীর হোসেন জানান, তার মা দীর্ঘদিন নির্বাচিত কাউন্সিলর। এবার তার স্ত্রী লিমা মানুষের সেবা করতে চান।

লিমা জানান, তিনি কাউন্সিলর না হয়েও এলাকার গরীব মানুষের সেবা করেছেন। আগামীতে আরো সেবা করতেই তিনি শাশুড়িসহ ছয়জনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন।

তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর শাশুড়ির কাছে গ্রহণ করা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ভোটারদের কাছে গিয়ে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। লিমা জয়লাভের ব্যাপারে আশাবাদী।

শাশুড়ি বর্তমান কাউন্সিলর খোদেজা বেগম জানান, তিনি গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। ছেলে অভিমান করে বউমা লিমাকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী করেছেন। ছেলের বউ প্রার্থী হলেও তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন।

তিনি মজা করে বলেন, ভোটাররা চশমা পড়ে কেন্দ্রে এসে তার জবাফুল মার্কায় ভোট দিবেন।

অপরদিকে ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, একই বাড়ি থেকে দুজন কাউন্সিলর প্রার্থী হলেও ভোটের পাল্লা তার মায়ের পক্ষে ভারি হবে।

এলাকার ভোটার রফিকুল ইসলাম, মোমেনা খাতুন, রেজাউল হাসান, মোর্শেদুল হক প্রমুখ জানান, তাদের ওয়ার্ডে সাতজন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তারা যোগ্য বিবেচনা ও ভালো-মন্দ পরখ করেই প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।

অসামাজিক কার্যকলাপ, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত কোন বিতর্কিত নারীকে তারা ভোট দিবেন না। তারা এ জন্য আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা