বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইয়াবার পরশে শামীম আরা এখন কোটিপতি!

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-০২-১৫ ১২:০৪:০৬  

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

আলোচিত ১৪ লাখ ইয়াবাসহ কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার রাজু মেম্বারের ছেলে জহিরুল ইসলাম ফারুক ও একই এলাকার মোজাফ্ফ এর ছেলে বাবু আটক হওয়ার পর পুরো জেলা জুড়ে চলছে চুল ছেঁড়া বিশ্লেষণ। ফলে একে একে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে পুরো নুনিয়াছড়ার এলাকার ইয়াবা কারবারি, তাদের সহযোগী ও আশ্রয় প্রশ্রয়কারিদের নাম।

অন্যদিকে, আটক দুই মাদককারবারী ফারুক ও বাবু ছিল ঠান্ডা মাথার মাদক কারবারি। যার কারণে এরা দীর্ঘদিন গোপনে মাদক কারবার করে আসলে প্রকাশ্যে কোন কিছু বোঝার ছিল না।
জানা যায়,এরা টেকনাফ থেকে কক্সবাজার এবং কক্সবাজার থেকে রাজধানী ও সারাদেশে মাদক সরবরাহ করে আসছিল। তবে তাদের মাদক কারবারের বিষয়ে অনেকে জানলেও ক্ষমতাসীন দলের মুষ্টিমেয় নেতাদের কারণে কেউ মুখ খোলার সাহস করেনি এতদিন।

এলাকাবাসীর মতে, নুনিয়ারছড়া এলাকায় ফারুক এবং বাবু ছাড়াও রয়েছে আরও দুই ডজন ইয়াবার চিহ্নিত মাদককারবারী। এই মাদককারবারীরা প্রত্যেকে এলাকার জনপ্রতিনিধি , রাজনৈতিক নেতা ও সমাজ কমিটির নেতা এবং ছাত্রনেতাদের মাসিক ভাতা দিয়ে নিশ্চিন্তে ওই মাদক কারবার করে এখন কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তাদের অনেকে এখন সাধু সেজে করছে ব্যবসা-বাণিজ্যও।

এদিকে,ইয়াবার আড়ালে ডজন দুয়েক মাদককারবারী ওই এলাকায় আছেন তাদের মধ্যে থেমে নেই নারী ইয়াবা কারবারিও। এখানে যেই কজন নারী মাদককারবারি আছে তাদের মধ্যে পরিচিত এক নাম শামীম আরা। যার চালচলনে এসেছে আকাশচুম্বী পরিবর্তন। এছাড়া নারীদের মধ্যে রয়েছে আটক বাবুর স্ত্রী সাজেদা আক্তার সাজু, আমেনা বেগম , রোজিনা ও পানির কুয়াপাড়ার লাল গোলাপী প্রমুখ ।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, শামীম আরা ও তার স্বামী সাইফুল ইসলাম হঠাৎ কোটিপতি বনে যাওয়ায় এলাকার মানুষের প্রশ্ন থেকে গেলেও কতিপয় কিছু নেতার সহযোগিতা ও রাজনৈতিক নেতার আত্মীয় পরিচয়ে চোখের অন্তরালে হয়ে গেছেন বাড়ী ও জমির মালিক।

স্বামী সাইফুল ইসলাম কক্সবাজারে প্রথম দিকে টিউশন করে জীবনযাত্রা শুরু করে। পরে একটি তেলের পাম্পে চাকরি শেষে হঠাৎ শামীম আরার সহযোগিতায় হয়ে যান কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক।

জানা যায়, নুনিয়ারছড়া এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে দুই তলা ভবনের পাশাপাশি রয়েছে নামে-বেনামে কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি।

এলাকাবাসীর মতে, শামীম আরা চিহ্নিত মাদকের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী হলেও তিনি এখন কাউন্সিলর মিজানের আস্থাভাজন নারীনেত্রী। যিনি নির্বাচনে আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি করেছেন নানা সহযোগিতাও । ফলে কাউন্সিলর মিজান সুবিধা নেয়া মাদক কারবারিদের রক্ষার জন্য সবসময় প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন জানান, শামীম আরা ও ফারুক ছিল শেয়ার ভিত্তিক ইয়াবা কারবারি। যেখানে দুইজনের সমান অংশীদারীত্ব ছিল। এছাড়াও ফারুক আটকের পর গুদামজাত করা ইয়াবাগুলোর মালিক এখন তিনি একা।

অভিযোগের বিষয়ে শামীম আরার সাথে কথা বলতে নুনিয়ারছড়া এলাকায় গেলে তিনি সব কিছু এড়িয়ে যান এবং সম্পত্তির বিষয়ে তিনি বলেন এসব কিছু তার স্বামীর আয়ে অর্জিত।

এদিকে, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান ফারুক ও বাবু আটকের পর সংবাদ সম্মেলনে ইয়াবা কারবারিকে কোনভাবে ছাড় না দেওয়ার কথা বলেন এবং মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করার হুশিয়ারি দেন।

নুনিয়ারছড়া এলাকার সচেতন মহল দ্রুত চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং তাদের সহযোগী কথিত নেতাদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানিয়েছেন। তাছাড়া কোনোভাবে কথিত এসব নেতাদের ইয়াবা নিমূর্ল কোনো কমিটিতে না রাখার দাবি তোলেন তারা।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা