বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

করোনা ভ্যাকসিন যেসব স্থানে দেওয়া হবে, আগে পাবেন যারা

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-০১-১১ ২২:০৪:৪৯  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ’র লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক বলেছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে টিকা পৌঁছবে ২৭ জানুয়ারি। কয়েকটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবকদের পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হবে। এক সপ্তাহ পর, মাঠ পর্যায়ে টিকা দেওয়া শুরু হবে ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে।

তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠীকে ৮ সপ্তাহ ব্যবধানে (১ম ডোজের ৮ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ) ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। টিকা পাওয়ার পর প্রথম ধাপেই দেওয়া হবে কোভিড প্রতিরোধে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে কর্মরত সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।

তিনি বলেন, প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিকদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কেউ যদি ২ ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণে ইচ্ছুক হন তবে তাকে অবশ্যই ২ ডোজের মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান নির্ধারিত ৮ সপ্তাহ দেশে অবস্থান করতে হবে। এক্ষেত্রে তাকে বৈধ কাগজপত্রাদি (পাসপোর্ট, ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি) দাখিল করতে হবে।  ভ্যাকসিন পরিবহণ, সংরক্ষণ ও দেওয়ার সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পুলিশ বাহিনী সর্বাত্মক সহায়তা দেবে। ভ্যাকসিন বিষয়ক সরকারি প্রচার-প্রচারণা নিশ্চিত করতে তথ্য মন্ত্রণালয় সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইন নিবন্ধন, ভ্যাকসিন কার্ড, সম্মতিপত্র, ভ্যাকসিন সনদ প্রদানে আইসিটি বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের ‘সুরক্ষা ওয়েবসাইট’ প্রস্তুত করা হয়েছে।

লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক আরও বলেন, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকার, সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যাল লিমিটেডের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৩ কোটি বা তার অধিক ডোজ ক্রয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় বিশ্বের ৯২টি দেশের মতো বাংলাদেশ মোট জনসংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ জনগোষ্ঠী তথা ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে। দেশে প্রদেয় অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনটি ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ইউকে রেগুলারেটি অথরিটির অনুমোদন লাভ করে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি এক্সপার্ট কমিটি ৭ জানুয়ারি ২০২১ ওই ভ্যাকসিনকে ‘ইমার্জেন্সি ইউস অথরাইজেশন প্রদান করে। এতে করে দেশে ওই ভ্যাকসিন ব্যবহারে আর কোনো বাধা নেই। এছাড়া নকল ভ্যাকসিন প্রতিরোধেও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এক্সপার্টের নির্দেশনা ও দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদানের অগ্রাধিকার নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন  সংরক্ষণের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণ করে যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য দেশের সব জেলা ও সিটি করপোরেশনের ইপিআই স্টোরসমূহকে ইতোমধ্যেই চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী  ৩ কোটি বা ততধিক ডোজ ভ্যাকসিন ৬টি ধাপে সরাসরি বাংলাদেশের নির্ধারিত জেলার ইপিআই কোল্ড স্টোরসমূহে পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।  ঔষধ প্রশাসনের অধীনে এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে।

যেসব স্থানে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে 

উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা/ সদর হাসপাতাল, সরকারি, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ, বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। সারা দেশে মোট ৭ হাজার ৩৪৪টি ভ্যাকসিন দল এই কাজ করবে। ভ্যাকসিন দানকারী হিসেবে থাকবে ২ জন নার্স, স্যাকমো, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে থাকবে ৪ জন।

তিনি আরও জানান, ১৮ বছরের নিচে এবং গর্ভবতী নারীদের টিকা দেওয়া হবে না।  অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করার পর এসএমএস করে টিকা নেওয়ার দিন ও সময় জানানো হবে।

করোনা টিকার জন্য যে সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে

করোনার টিকা নেওয়ার আগে একটি সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে। কারণ যাকে টিকা দেওয়া হবে তার একটা অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। আমরা একটি সম্মতিপত্র তৈরি করেছি। সেখানে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, তারিখ, পরিচয়পত্র এবং নাম থাকবে।

সম্মতিপত্রে লেখা থাকবে ‘করোনার টিকা’ সম্পর্কে আমাকে অনলাইনে এবং সামনাসামনি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই টিকা গ্রহণের সময়, অথবা পরে যে কোনো অসুস্থতা, আঘাত বা ক্ষতি হলে, তার দায়ভার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা সরকারের নয়। আমি সম্মতি দিচ্ছি যে, টিকা গ্রহণ ও এর প্রভাব সম্পর্কিত তথ্যের প্রয়োজন হলে আমি তা প্রদান করব। জানা মতে, আমার ওষুধজনিত কোনো অ্যালার্জি নেই। টিকা গ্রহীতাকে আরও সম্মতি দিতে হবে যে, ‘টিকাদান পরবর্তী প্রতিবেদন অথবা গবেষণাপত্র তৈরির বিষয়ে অনুমতি দিলাম। আমি স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে এই টিকার উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবগত হয়ে টিকা গ্রহণে সম্মত আছি। এই সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে এবং এটা সরকারের কাছে সংরক্ষিত থাকবে।’


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা