২৬ দিন পর মেয়ের লাশ পাচ্ছেন লাকিংমে চাকমার বাবা

প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৪, ২০২১

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গের হিমঘরে ২৬ দিন থাকার পর কিশোরী লাকিংমে চাকমার (১৫) লাশ পাচ্ছেন তার স্বজনরা। বাবা ও স্বামীর পরিবারের দ্বন্দ্বে আইনি জটিলতার কারণে এতদিন তার লাশ হিমঘরে রাখা হয়।

সোমবার (৪ জানুয়ারি) আদালতের নির্দেশে লাশ নিতে হাসপাতালে আসেন লাকিংমের বাবা লালা অং চাকমা। কিন্তু হাসপাতালের হিমঘর থেকে লাশ নিতে লালা অং চাকমাকে ২৪ হাজার টাকা বিল দিতে হবে যা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। ফলে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষার পরও মেয়ের লাশ না পাওয়ায় বিল দিতে রাজি হয় ঘটনার তদন্ত সংস্থা র‌্যাব-১৫। এতে মেয়ের লাশ নিতে লালা অং চাকমা বাধা নেই।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, কিশোরী লাকিংমে চাকমার লাশ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হবে।

লাকিংমের বাবা লালা অং চাকমা বলেন, অভাবের সংসারের কারণে এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য না থাকার কারণে মেয়ের লাশ নিতে পারছিলাম না। অবশেষে র‌্যাব এই টাকা দিতে রাজি হওয়ায় লাশ গ্রহণের জন্য অপেক্ষায় রয়েছি। আমার মেয়ে লাকিংমেকে অপহরণের পর জোর করে বিয়ে ও পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার প্রিয় সন্তানের (লাকিংমে) লাশ গ্রামে নিয়ে শেষকৃত্য করতে চাই।

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহম্মেদ বলেন, নিহত লাকিংমের বাবা লালা অং চাকমা খুবই দরিদ্র। মর্গের বিল ২৫ হাজার টাকার জন্য মেয়ের লাশ নিতে পারছিলেন না তিনি। খবর পেয়ে আমরা মর্গের বিল পরিশোধ করায় লাকিংমে চাকমার লাশ নিতে আর কোনো বাধা রইল না।

বাবা লালা অং চাকমার দাবি, ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি তার মেয়ে লাকিংমেকে স্থানীয় যুবক আতাউল্লাহর নেতৃত্বে কয়েকজন অপহরণ করে। এরপর জোর করে বিয়ে করে হত্যা করা হয়। তিনি এখন মেয়ে হত্যার বিচার চান।

এদিকে, স্বামী দাবিদার আতাউল্লাহর দাবি, লাকিংমেকে অপহরণ করা হয়নি। স্বেচ্ছায় তারা বিয়ে করেছেন। বিয়ের আগে লাকিংমে ধর্মান্তরিত হয়ে হালিমাতুল সাদিয়া রাখেন। এত দিন তারা কুমিল্লায় থাকলেও ৬ মাস আগে স্ত্রীসহ টেকনাফে আসেন। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বিউটি পার্লারে যাওয়া নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে রুমে গিয়ে সাদিয়া বিষ পান করে। মারা যাওয়ার ১২ দিন আগে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন সাদিয়া।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের একটি আদালত নিহত কিশোরীর ধর্মান্তরকরণ ও অপহরণের ঘটনা তদন্তে র‌্যাবকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে র‌্যাব-১৫ রবিবার (৩ জানুয়ারি) আদালতে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একইদিন শেষ পর্যন্ত বাবার জিম্মায় দেয়ার নির্দেশ দেন।