বাংলাদেশ, , বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ‘আত্মঘাতী’ হামলার টার্গেট

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০১৯-০৮-১৮ ০৮:৫০:৩০  

বড় ধরনের হামলার উদ্দেশ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সির (অনলাইনে অর্থ লেনদেন) মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছিল নব্য জেএমবির ‘উলফ প্যাক’র সদস্যরা। আন্তঃদেশীয় অপরাধী গ্রুপের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টাও করছিল তারা।

তবে তাদের প্রধান টার্গেট ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর ‘আত্মঘাতী’ হামলা। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শক্তিশালী হাতবোমা ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরির সরঞ্জামও সংগ্রহ করে তারা।

এ গ্রুপের পাঁচ সদস্যকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। ৮ আগস্ট রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে সিটিটিসি ইউনিট। গ্রেফতার পাঁচজনই কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, গ্রেফতার পাঁচজনের গ্রুপটির আধ্যাত্মিক নেতা শাহ এম আসাদুল্লাহ মর্তুজা কবীর। সে নিজেই ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিল।

হামলা পরিচালনার জন্য সে ডার্ক ওয়েব থেকে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করে। কিছু অর্থের বিষয়ে তথ্যপ্রমাণও পাওয়া গেছে। এ গ্রুপের আরেক সদস্য মাশরিক আহমেদ আন্তঃদেশীয় অপরাধী গ্রুপের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছিল।

সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করছিল আশরাফুল আল আমীন ওরফে তারেক ও এসএম তাসনিম রিফাত। পুলিশকে টার্গেট করে আত্মঘাতী হামলা পরিচালনার কথা ছিল মোহাম্মদ শিবলী শাহাজাদ ওরফে সাদীর।

সিটিটিসি জানায়, জঙ্গিবাদে কেউ একাকী উদ্বুদ্ধ হলে তাকে ‘লোন উলফ’ বলে। আর এই সংখ্যাটি যখন এক থেকে পাঁচজন বা তারও অধিক হয়, তখন তাকে উলফ প্যাক বলা হয়।

গ্রেফতার পাঁচজনের মধ্যে শিবলী শাহাজাদ ও মর্তুজা কবীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র শিক্ষার্থী। মাশরিক যশোরের এম এম কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করেছে।

তাসনিম রিফাত যশোরের উপশহর ডিগ্রি কলেজে স্নাতকে পড়ছে। আশরাফুল আল আমিন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে।

সিটিটিসি সূত্র আরও জানায়, শিবলী শাহাজাদ ২০১৪ সাল থেকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ। কলাবাগান এলাকার আলামীন মসজিদে কয়েকজন জঙ্গির মাধ্যমে সে উদ্বুদ্ধ হয়।

আর মর্তুজা কবীরের সঙ্গে আড়াই মাস আগে বসুন্ধরার ডি ব্লকের একটি মসজিদে পরিচয় হয়। মাশরিক এবং মর্তুজা কবির দীর্ঘদিনের বন্ধু। মাশরিক এক সময় তাসনিম রিফাতের গৃহশিক্ষক ছিলেন। গ্রেফতার পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও কয়েকজনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।

সিটিটিসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, নব্য জেএমবির ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ ‘উলফ প্যাক’ গ্রুপটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ক্ষিপ্ত। এর কারণ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছে, হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে অনেক জঙ্গি নিহত হয়েছে। অনেক জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। এ কারণেই তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে টার্গেট করেছিল। তারা হামলার স্থানও নির্ধারিত করেছিল। তবে ওই জায়গার বিষয়টি কৌশলগত কারণে প্রকাশ করা হচ্ছে না।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা