বাংলাদেশ, , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

মাদকের হাট ও ছিনতাইয়ের সেইফ জোনঃডাক বাংলো

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২০-১২-০২ ০১:৫০:৪২  

চিহ্নিত অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে বাসটার্মিনালস্থ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন
করপােরেশন (বিএডিসি) কক্সবাজারের ডাক বাংলাে ।

অন্ধকার ঘনিয়ে আসলে এখানে বসে জুয়া ও মাদকসেবীদের রমরমা আসর। স্থানটি শহরের প্রবেশমুখ হওয়ায় এই স্থানকে ঘিরে অপরাধী চক্রের সদস্যরা অপহরণ, চুরি,ছিনতাই, ডাকাতিসহ খুনের মতাে জঘন্য অপরাধ করে এবং এই স্থানে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

সরকারি এই ডাক বাংলােকে নিরাপদ আস্তানা বানিয়েছে তারা। এ নিয়ে স্থানীয়রা আতংকে থাকেন প্রতিনিয়ত। মঙ্গলবার রাতে বিএডিসি
ডাক বাংলাের আশপাশের এলাকা গিয়ে জানাযায়, কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে ডাক বাংলাে দিয়ে ঢুকলে হাতের বামে পাড়ে
খােলা জমি নিয়ে একটি স্থাপনা। ওই স্থাপনার মূল ফটক পর্যন্ত কোন সড়ক বাতির নেই।

এছাড়া ডাক বাংলো থেকে বিজিবি ক্যাম্প, ফার্ম
বিল, হিন্দুপাড়া, ঘৃতপল্লী, লারপাড়া,ইসলামাবাদ, জেল গেইট, কাটা পাহাড়সহ। আশপাশের এলাকার প্রায় সড়ক বাতি অকেজো। যা রয়েছে তাও অন্ধকারাচ্ছন্ন। পশ্চিমা আকাশে সূর্য অস্ত যেতেই পুরাে এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। এসময় নিরাপদ আস্তানা গড়ে তােলে অপরাধীরা । ধীরে ধীরে আনাগােনা বাড়তে থাকে অপরাধীদের।

ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ওইসব এলাকা দাপিয়ে বেড়ায় চোর-ছিনতাইকারীসহ পেশাদার অপরাধীরা। রাতের আঁধারে চলে জমজমাট ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাজা বিক্রি। ডাক বাংলাের পরিত্যক্ত একাধিক স্থানে বসে জুয়ার আসরও। আগে রাত ১২টার পর বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করতেন সদর থানা ও শহর পুলিশ ফাঁড়ির একাধিক টিম কিন্তু পুলিশের রদবদলে বর্তমানে তা আর দেখা যায় না।

যার ফলে ওইসব এলাকা বর্তমানে অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে । প্রতিনিয়ত এখানে বাড়ছে চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম । স্থানীয়রা জানান, পুরাে এলাকায় সরকারি-বেসরকারি ঢাকুরীজীবি, এনজিও কর্মী, বিভিন্ন যানবাহন ঢালসহ নানান পেশার মানুষের বসবাস
রয়েছে।

সন্ধ্যার পর থেকে এখানে চলাচল করতে হয় আতংক নিয়ে। সম্প্রতি মহিলারা কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইয়ের শিকার
হচ্ছে বলে অভিযােগ উঠেছে ।

ছিনতাইকারী অন্ধকারের সুযােগে হঠাৎ এসে পথচারিদের স্বর্বস্ব লুট করে ডাক বাংলাের আস্তানায় গিয়ে আশ্রয় নেয় বলে জানা গেছে ।

গরীব রিকশা, ইজিবাইক ও সিএনজি চালকেও চোর-ছিনতাইকারীদের কবল থেকে রেহায় পান না । অপরাধ চক্রে আতংকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা রাত জেগে পাহারায় থাকে ।

জানা যায়, এক বছর আগে এলাকার সড়কবাতি মেরামত করা হয়েছিল মেরামতের দুই সপ্তাহের মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে প্রায় সড়ক বাতি। এরমধ্যে পৌর কর্মীরা এসে মেরামত করে চলে যাই। কিন্তু পরক্ষণে
ফের অচল হয়ে যায়।

স্থানীয় নাইট গার্ড নাজির হােসেন বলেন,

সড়ক বাতি না থাকায় এখানকার অধিকাংশ এলাকা থাকে ঘুটঘুট অন্ধকারে। এই সুযােগে অপরাধীরা অনেক অটোরিকশা ও টমটম চুরি করে নিয়ে গেছে । চুরি করাহয় দোকানও। প্রতিদিন ঘটছে অহরহ ছিনতাইয়ের ঘটনা । আমরা প্রতি রাতে পাহারা দিচ্ছি। কিন্তু পুলিশী টহল কমে যাওয়ায় অপরাধীরা বেপরােয়া হয়ে উঠে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলেন,

আমরা এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সব ধরণের চেষ্টা ঢালিয়ে যাচ্ছি। তবুও সন্ধ্যার মানুষ যেন নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য
চেকপােস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম অব্যাহত রাখা প্রয়োজন । নতুবা এমন ঘটন নিত্যনৈমত্তিক ঘটবে।

এব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সিনিয়র কৃষি অফিসের কর্মকর্তা শাহ মােঃ জালাল উদ্দিন বলেন,

পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় এই সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে।বাইরের কিছু অতিথি আসলে এখানে থাকেন। তবে বর্তমানে মাশরুমের অফিসে উন্নত মানের থাকার ব্যাবস্থা হওয়ার কারণে ডাক বাংলােটি তেমন ব্যবহার হয় না। ফলে আশপাশের ছিনতাকারীসহ নানান অপরাধীদের আনাগােনা বেড়েছে এখানে।

এই জন্য তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযােগিতা কামনা করেন।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা