বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

বেয়ার গ্রিলসের সঙ্গে মোদির ‘বন কি বাত’

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০১৯-০৮-১৩ ০৮:৫৯:০৪  

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ডিসকভারি চ্যানেলের জনপ্রিয় প্রোগ্রাম ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’- এ গতকাল অর্থাৎ ১২ আগস্টের এক পর্বে দেখা যায়। যেখানে গ্রিলসের দুঃসাহসী অভিযানের সঙ্গী ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। উত্তরাখন্ডের ভারতের জিম করবেট জাতীয় উদ্যানে ওই অভিযানে খবর পাওয়া গিয়েছিল গত মাসে।

হেলিকপ্টার থেকে নামলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নেমে বাকি পথ গেলে গাড়িতে। দেখা হলো ডিসকভারি চ্যানেলের বেয়ার গ্রিলসের সঙ্গে। শুধু প্রকৃতি সংরক্ষণের কথা নয়, মোদি নিজে থেকেই বার্তা দিলেন পর্যটকদের।

প্রথমেই মনে করিয়ে দিলেন, বিশ্বের কাছে কেন এটা এত আকর্ষণীয় স্থান। প্রথমত; পাহাড়, প্রকৃতি, নদী, হ্রদ, যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য এটা এক সুন্দর স্থান। দ্বিতীয়ত; যারা বনস্পতির বিবিধতা সম্পর্কে আগ্রহী তাদের জন্যও বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্র এই বনাঞ্চল।

বেয়ার গ্রিলস ফের বললেন, ‘উত্তরাখণ্ডে জিম করবেট জাতীয় উদ্যানে তো হিংস্র পশু আছে। বাঘ আছে।’ মোদি জবাব দিলেন, ‘আমরা প্রকৃতির সঙ্গে তালমিল রেখে চললে বন্যপ্রাণীও কিছু করবে না।’ মোদি আর বেয়ার গ্রিলসের এই কথোপোকথন প্রকাশিত হয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে।

বেয়ার গ্রিলস : শৈশব কোথায় কেটেছে?

নরেন্দ্র মোদি : গুজরাটে এক ছোট এলাকায় আমি জন্মেছি। ছোট একটি পরিবারে আমার জন্ম। ভাল ছাত্র ছিলাম না। সাবান কেনার ক্ষমতা ছিল না। বৃষ্টি পড়লে লবণের স্তর তৈরি হত। তা দিয়ে স্নান করতাম। কাপড় কাচতাম। এ ভাবে প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে বড় হয়েছি।

পথে হাতির মলের গোলা তুলে মোদিকে শোঁকালেন বেয়ার গ্রিলস। বললেন, ‘বেশ টাটকা। এর গন্ধ মশা আসতে দেয় না। আগে একবার এর রস চিপে তেষ্টা মিটিয়েছি। আপনাকে বলছি না।’

বেয়ার গ্রিলস : ছোটবেলা থেকেই এমন চমকদার পোশাক পরতেন?

নরেন্দ্র মোদি : স্কুলে যেতাম ফিটফাট। তামার ঘটিতে কয়লা ভরে ইস্ত্রি করতাম। বাবাকে সাহায্য করতাম। স্টেশনে চা বিক্রি করতাম। হিমালয়ে কাটিয়েছি অনেক বছর। আজও সেটাই শক্তি দেয়।

 

মেঘ ডাকছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। জঙ্গল পেরিয়ে দুজনে গেলেন জলের কাছে। বেয়ার তুললেন মায়ের প্রসঙ্গ। মোদি জানালেন, তার মায়ের বয়স এখন ৯৭ বছর। এখনও নিজের সব কাজ নিজেই করেন। বেয়ার গ্রিলস বললেন, ‘মা তো মা-ই হয়। আমার ছবি দেখে বলে, আগে চুলটা কেন আঁচড়ে নিসনি।’

এরপর ক্যামেরায় মুখ বাড়িয়ে বেয়ারের স্বগতোক্তি, যতবারই তাকে নিজের কথা বলতে বলছি, ততবারই তিনি ভারতের কথা বলছেন। পশ্চিমে আমরা সবাই নিজের কথাই ভাবি।’

মোদি জানালেন, ‘যখনই প্রকৃতির সঙ্গে সংঘর্ষের কথা বলি, সেখান থেকেই ভুলের শুরু। আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। তবু প্রথম বৃষ্টি হলে, প্রচুর পোস্টকার্ড কিনে বাবা আত্মীয়স্বজনকে চিঠি লিখতেন— আজ আমাদের এখানে বৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে এমনই সম্পর্ক আমাদের। গাছ কাটতে দেয়া হত না। কারণ গাছের প্রাণ আছে।’

মোদি রাবারের তৈরি ভেলায় বসে আছেন। র‌্যাফট ঠেলে এগোলেন বেয়ার গ্রিলস। বললেন, ‘দুই নদীর সংযোগস্থলটাকে ভয় পাচ্ছি।’ নির্বিকার মোদি বললেন, ‘ছোটবেলা এ ভাবেই কেটেছে। ভয় পাই না।’

বেয়ার প্রকৃতি সংরক্ষণের প্রসঙ্গ তুলতেই মোদির জবাব, ‘এটা প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত্ব। ভারতে তো প্রতিটি গাছকে ভগবান মানা হয়। প্রকৃতিকে ভালবেসে চলতে হবে।’

পরক্ষণেই মোদির মন পর্যটন বাণিজ্যে। বললেন, ‘যুব সমাজ যখন এটা দেখবে, ভারতকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেবে।’

প্রধানমন্ত্রী মোদি ওই অনুষ্ঠানে থাকছেন এটি আগে নিজেই জানিয়েছিলেন তিনি। আর এর জন্য মুখিয়ে আছেন বলেও তার বিবৃতি থেকে জানা যায়। যার মাধ্যমে পরিবেশগত পরিবর্তন সম্পর্কিত বিষয়গুলো তুলে ধরার কথা জানানো হয়েছিল।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা