বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

সেপ্টেম্বরে আসতে পারে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ কমিটি

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০১৯-০৭-৩০ ১০:৩৫:৩১  

কক্সবাজার, ৩০ জুলাই ১৯

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়ে গত ৯ মে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বেঁধে দেয়া সময় শেষ হলেও ঔ সময়ের মধ্যে সম্মেলনের তারিখ দিতে ব্যর্থ হয়েছে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ। তবে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সম্মেলনের সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ অবস্থায় সেপ্টম্বরের শুরুতেই জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

অপরদিকে, জেলা ছাত্রলীগকে নির্দ্দিষ্ট সময়ে বেঁধে দেয়ার পর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেন্দ্রে দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়েছে। তারা কেন্দ্রীয় সভাপতি/সম্পাদকের বরাবরে লবিং ও তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো: ইমরান শেখ জানিয়েছেন, বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে ব্যর্থ হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৩ই ডিসেম্বর কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে জেলা ছাত্রলীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের এক মাস পর ২০১৫ সালেল ১০ জানুয়ারি ইশতিয়াক আহমেদ জয়কে সভাপতি ও ইমরুল হাসান রাশেদকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি ঘোষনা করা হয়। গঠনতন্ত্রের ১০ ধারার (খ) উপ-ধারা মতে অনেক আগেই কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখও ঘোষনা করেছিলেন। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যু, জাতীয় নির্বাচনসহ নানা সমস্যার কারণে যথা সময়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলাম রাহিতের উপর নগ্ন হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি/সম্পাদকের কাছে একটি প্রতিবেদন দেন। উক্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রিজুয়ানুল হক শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী গত ৯ জুন আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষনার নির্দেশ দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেন। একই সাথে সম্মেলন করতে ব্যর্থ হলে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি আপনা আপনি বিলুপ্ত বলে ধরে নেয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের এমন নির্দেশ থাকার পরও সম্মেলন নিয়ে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা।

জেলা ছাত্রলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মীই সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্বে পরিবর্তন চান। কিন্তু ৬০ কর্মদিবস শেষ হতে চললেও এখনো জেলা ছাত্রলীগ পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যদের নিয়ে আলোচনা সভা করা হয়নি। এ অবস্থায় কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে দাবি জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের। অছাত্র, বিবাহিত, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকাসক্ত, মামলার আসামী, দখলবাজ, চাঁদাবাজ কেউ যেন স্থান না পায় সেদিকে নজর দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্ধের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।

জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শাহ নিয়াজ বলেন, আমরা সম্মেলনের মাধ্যমে বিদায় নিতে চাই। কিন্তু সম্মেলনের করণীয় নিয়ে এখনো জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক আমাদের সাথে বসেননি। যদি সম্মেলন না হয় তবে, আমরা আশা করবো ‘যারা দলের জন্য দীর্ঘদিন কাজ করেছেন, যাদের নামে কোন অভিযোগ নেই, এক কথায় সংগঠনের সাথে দায়বদ্ধ, তাদের মূল্যায়ন করা হবে।

এদিকে জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে চাওয়া কর্মীদের মধ্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক মারুফ আদনান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সরওয়ার আজম, আপ্যায়ন সম্পাদক কায়সার চৌধুরী রুবেল, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম সাদ্দাম হোসেন, শাখাওয়াত হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক মঈন উদ্দিন,  প্রচার সম্পাদক আলিফ উজ জামান শুভ’।

জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে চাওয়া শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, ছাত্রলীগের প্রত্যেক কর্মীর অধিকার রয়েছে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা করা। দলের কর্মীরা যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করবে। সম্মেলন হউক বা না হউক, আমি নেতা হই বা না হই, অতীতের মতো দল ও দলের কর্মীদের জন্য কাজ করে যাবো।

জেলা ছাত্রলীগ আপ্যায়ন সম্পাদক কায়সার চৌধুরী রুবেল, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে ছাত্রলীগ করে যাচ্ছি। নেতা হবে দুইজন। আমি আমার যোগ্যতা প্রমাণ দিতে কাজ করে যাচ্ছি। যদি মাঠের কর্মী ও কেন্দ্রীয় নেতারা আমাকে যোগ্য মনে করেন তবে প্রতিদান দিবো ইনশেল্লাহ।

জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোর্শেদ হোসেন তানিম বলেছেন, ছাত্রলীগের একটি সুনিদ্দিষ্ট গঠণতন্ত্র রয়েছে। এর বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া গত ৯ মে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক ৬০ কর্মদিবস বলতে কি বুঝিয়েছেন তা আমি বুঝতেছি না। তারপরও আমরা চেষ্টা করবো কেন্দ্রের নির্দেশনা মতে কাজ করতে। আমরা ব্যর্থ হলে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত দিবে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো: ইমরান শেখ জানান, সম্মেলনের তারিখ পেছানোর জন্য কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি আবেদন কেন্দ্রে দেয়া হয়েছে। এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, জুলাই মাসে সম্মেলনের তারিখ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় যে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক।

সূত্রঃ আলোকিত কক্সবাজার


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা