প্রধানমন্ত্রী কাছে ১২ সহস্রাধিক শিক্ষানবীশ আইনজীবীর খোলা চিঠি

প্রকাশিত: ২:৫৫ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০২০
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
অতীব বিনয়ের সাথে আপনার সদয় বিবেচনার জন্য আমরা সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষানবীশ আইনজীবীগন সম্মিলিত ভাবে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, বিভিন্ন আইনি জটিলতায় বিগত ৫ বছর যাবৎ এনরোলমেন্ট পরীক্ষা না হওয়ায় দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারী একটি পরীক্ষা দিতে পেরেছি। ঐ পরীক্ষায় প্রায় ৫২ হাজার পরীক্ষার্থী অংশগ্রহন করলেও তুমুল প্রতিদ্বন্দীতা করে মাত্র সারে ৮ হাজারের মত পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয়ে যোগ্যতার প্রমান দিতে সক্ষম হয়েছি। সমস্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও একটি জটিল পরীক্ষা পদ্ধতির কারনে একদিকে আমরা বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে পিতা মাতা সহ রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে অসম্মানের জীবনযাপন করিতেছি অন্যদিকে রাষ্ট্রের বেকারত্বের তালিকা হচ্ছে দীর্ঘ। অদৃষ্টের নির্মম পরিহাস বিভিন্ন জটিলতার কারনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট পরীক্ষা ৩/৪ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হওয়ায় জীবনের অনেক মূল্যবান সময় আইন পেশায় তালিকা ভূক্তির পূর্বেই হরিয়ে যাচ্ছি।
প্রিয় মমতাময়ী মা,
বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারনে সকল জনসমাগম অসম্ভব এবং এর সময়কাল আমাদের সকলেরই অজানা।
সকল পরীক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকায় জড়ো হলে তাদের থাকার জন্য কোন প্রকার বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না এবং এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সংশ্লিষ্ট সকলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এমতপরিস্থিতিতে আমরা যাহারা কঠোর অধ্যাবসয়ের মাধ্যমে কেউ ২০১৭ সালে আবার কেউ বা ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এম সি কিউ পরীক্ষায় তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পাশ করেছি তাদের পরবর্তী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা মহামারির কারনে মওকুফ করে গেজেট করে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভূক্তির জন্য আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করিতেছি।
হে মানবতার মা
যেহেতু মজলুমেরর পক্ষে কাজ করে ইতোমধ্যে আপনি বিশ্ব দরবারে মানবতার মা উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। আপনি ২০১৩ সালে ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কে জাতীয়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছিলেন। ২০১৭ সালে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদের সরকারি স্বীকৃতি দিয়েছিলেন আপনি তামাম বাঙ্গালীর হৃদয়ের মনি, আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বর্তমানেও করোনা মহামারীর কারণে ডাক্তার ও নার্স স্পেশাল ভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। এরূপ অসংখ্য নজীর আপনি স্থাপন করছেন যা বাংলাদেশে ইতিহাসের পাতায় আপনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। উন্নত রাষ্ট্র সহ তামাম দুনিয়ার রাষ্ট্রনায়করা আজ আপনাকেই অনুসরন করছে।
প্রিয় মমতাময়ী মা
আপনি একমাত্র বাংলাদেশের জনগনের মনের ও কষ্টের ভাষা বুঝেন।আপনিই আমাদের শেষ আশ্রয়স্হল, আপনিই পারেন আমাদের বেকারত্বেরে অভিশাপ ও মা বাবার শেষ স্বপ্ন বাস্তবে রুপান্তরিত করতে।
প্রিয় মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী
২০১৭ ও ২০২০ সালে তুমুল প্রতিযোগীতা করে এমসিকিউ পরীক্ষায় পাশ করা শিক্ষা নবীশ আইনজীবীদের কে বর্তমানে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা ছাড়া গেজেট করে সনদ দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রিয় জননী,
বার কাউন্সিলের ইতিহাসে দেখা যায়, দেশের এক সংকটময় মূহর্তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বার কাউন্সিল তালিকাভূক্তির ক্ষেত্রে শিথিলতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রিয় দেশরত্ন মা
আপনি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান বিভিন্ন পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিথিলতা ও অব্যাহতি প্রদানের বিষয়টি মানবিক কারনে বিবেচনা করেছেন তাই আমাদের দুর্বিষহ শিক্ষা নবীশ কাল থেকে মুক্তি দিতে আপনার যেন সদয় মর্জি হয়।
বিনীত
এমস কিউ ২০১৭ ও ২০২০ পরীক্ষায় উত্তীর্ন বাংলাদেশের সকল শিক্ষানবীশ আইনজীবীবৃন্দ।
 পক্ষে- রাশেদুল ইসলাম মুন্না