বাংলাদেশ, , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

করোনা ঝুঁকিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ারান্টাইনে

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২০-০৬-০২ ২২:৪৫:১৭  

শাকিল, বাংলাদেশ পেপারঃ  

চট্টগ্রামের করোনা মহামারি মোকাবেলায় এগিয়ে আসছে নানা সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। করোনা আক্রান্ত বা করোনার ঝুঁকিতে থাকাদের সহায়তায়ও উদ্যেগের কমতি নেই। তবে প্রথমবারের মত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগরীর প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে এসেছে করোনা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা রাখা পুলিশ সদস্যদের সহায়তায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এক মাস আগে তাদের ছাত্রীনিবাসকে কোয়ারান্টাইন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেন। সেই থেকে চট্টগ্রামে করোনার রোগিদের সংস্পর্শে আসা বা করোনার ঝুঁকিতে থাকা পুলিশ সদস্যদের কোয়ারেন্টাইন সুবিধা নিশ্চিতে কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ছাত্রীনিবাস।

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার খুরশিদুর রহমান জানান, গেল এক মাস ধরে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীনিবাসকে কোয়ারান্টাইন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ছাত্রীনিবাসটি কোয়ান্টাইন কেন্দ্র হিসাবে কাজে লাগাতে জেলা প্রশাসনকে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলাপ করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য নগরীর সাগরিকাস্থ এ ছাত্রী হোস্টেলটির নির্মানকাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। হোস্টেলটিতে এখন পর্যন্ত কোন ছাত্রী ভর্তি করা হয়নি।

পাহাড়তলি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাঈনুর রহমান  বলেন, “নগরীর সাগরিকায় প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীনিবাসটি এখন সম্পূর্ণভাবে পুলিশ লাইনসের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ। যেসব পুলিশ সদস্য করোনা রোগিদের সংস্পর্ষে এসেছে কিংবা যাদের করোনা হওয়ার আশংকা রয়েছে তারা এই কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রে নিজেদের আলাদা করে রাখছেন। ”
তিনি আরো জানান, বর্তমানে এই কেন্দ্রে ৪০ জন পুলিশ সদস্য রয়েছে যারা নানাভাবে করোনা রোগির সংস্পর্শে এসেছেন বা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এদের সকলের প্রাত্যহিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয় এবং নিয়মিতভাবে চিকিৎসক তাদের শারিরীক অবস্থার পর্যবেক্ষণ করেন। “কারও যদি করোনা উপসর্গ তীব্র হয় তবে তাদএর আমরা পুলিশ হাসপাতালে প্রেরণ করি” বলেন মাঈনুর রহমান।

তিনি আরো বলেন, এই হোস্টেলটি অবকাঠামোগত ভাবে কোয়ান্টাইন কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ উপযোগী। এখানে আলাদা আলাদা ৪৫ টি কক্ষ রয়েছে যেখানে একজন আরেক জনের সংস্পর্শে না এসে নিরাপদে কোয়ারান্টাইনে থাকতে পারবে। এছাড়াও এখানে উন্নত টয়লেট সুবিধা রয়েছে যা আধুনিক ও উন্নত মানের কোয়ারেন্টাইন সুবিধা নিশ্চিত করতে সাহায্য করছে।
অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার পিওএম এই কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করছেন বলেও জানান পাহাড়তলি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার খুরশিদুর রহমান বলেন, নিজস্ব ভূমিতে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আটতলা ছাত্রীনিবাসটি নির্মিত হয়েছে। আলাদা খাট ও বিছানা, নিজস্ব কেবিনেট, টেবিল, চেয়ারের পর্যাপ্ত জায়গা রেখে হোস্টেলটি নির্মান করা হয়েছে। এমনকি জেনারেটর ও ইন্টারকম সুবিধাও রয়েছে ছাত্রী নিবাসটিতে। নিরাপত্তার নিশ্চিতে আনসার সদস্যও আছেন।

উল্লেখ্য চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চ শিক্ষা দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে সাবেক সিটি মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ২০০১ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠা করেন এই বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০২ সালে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর বর্তমান শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষায় একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ড.অনুপম সেন।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা