করোনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অমানবিকতা

প্রকাশিত: ১১:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০২০

দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে তাদের ছাত্র ছাত্রীদের ক্লাস নিয়েছেন।

১. যেহেতু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো/ মেডিকেল কলেজগুলো ছাত্র ছাত্রীদের পয়সায় বাড়ি ভাড়া, ক্লিনিং, বিদ্যুত পানি গ্যাসসহ সব ইউটিলিটি বিল দেয়, এবং করোনার কারণে এই খরচটা তাদের অনেক কম হচ্ছে। তারা এই টাকাটা ছাত্রছাত্রীদের ডিসকাউন্ট দিতে পারতেন।

সেটা না করে তারা সকলকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে গিগা গিগা ডেটাপ্যাক কিনতে বাধ্য করেছেন।

২. তারা তাদের ছাত্রছাত্রীদের নতুন সেমিস্টারের ফি সম্পুর্ণ পরিশোধ করতে বাধ্য করছেন। একের পর এক এসএমএস ও মেইল করে তাগাদা দিচ্ছেন। না দিয়ে উপায়ও নাই। কারণ এখন না দিলে পরে তারা এটা নিয়েই ছাড়বেন। সেমেস্টার ব্রেক দিলেও নানা রকম চার্জেস নেবেন। এটা দিতেও কেউ আপত্তি করছেন না।

৩. অথচ তারা এবার ঈদের আগে বহু শিক্ষকদের বেতন সম্পুর্ণ পরিশোধ করেন নাই। বোনাস দেন নাই। চাকরি করলে বেতন পাবে না কেন? কোন যুক্তিতে?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এই করোনা আক্রমণের সময় মনুষ্যত্বের পরীক্ষা দিতে। তিনি মানবিক হতে বলেছিলেন। অথচ এরা যে প্রায় অমানুষ সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন।

এই হলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলগুলোর মনুষ্যত্ব। এগুলো যারা চালায় তারা বলে এসব নাকি নন প্রফিটেবল। ফিলানথ্রপি। এখন বোঝা যাচ্ছে, দুমাসে তাদের ফিলানথ্রপি, অ্যাট্রফি হয়ে রুডিমেন্টারি হয়ে গেছে।

ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে, উন্নয়ন ফী নামে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে তারা অনেকেই বিঘায় বিঘায় একরে একরে জমি কিনেছেন। বহু কোটি টাকা স্থায়ী আমানত করেছেন।

আর এখন ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে পূর্ণ বেতন নিয়ে শিক্ষকদের/কর্মচারীদের বেতন কাটছেন। বোনাস দিচ্ছেন না।

হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করা নিয়ে রোজ হুমকি ধামকি না দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অমানুষ পরিচালনা কমিটিকে সঠিক কাজ করতে বলা বেশি দরকার।

মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অবিচারের চূড়ান্ত নিদর্শন রাখছেন যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, তাদের শিক্ষকরা ভয়ে এই কথাগুলো বলতেও পারছেন না। যদি চাকরি চলে যায়? আইন মানতে হবে। এভাবে বেতন বোনাস কর্তন করা বেআইনী কাজ।

যাদের সাহস আছে তারা এই স্ট্যাটাসের নিচে কেবল অবিচারকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর/ মেডিকেল কলেজগুলোর নাম লিখে শেয়ার দিতে পারেন। অমানুষগুলোকে বলতে হবেই আমাদের “আবার তোরা মানুষ হ”।

লেখক: গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক

 

ঢাকা টাইমস হতে সংগ্রহীত