বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মুজিব শতবর্ষে মিথ্যাচারঃসংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২০-০৩-১৬ ২০:২০:১৪  

বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস বিকৃত করে ১৮ লাখ টাকার জমি লীজ


কক্সবাজারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে প্রচারিত কথিত আত্মগোপন, মিথ্যা, তথ্যহীন, ভিত্তিহীন, উদ্যেশ্য প্রণোদিত কল্প কাহিনী প্রচার বন্ধ করে প্রকৃত ইতিহাস প্রচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ)।

সোমবার ১৫ মার্চ কক্সবাজার পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে সংগঠনটির কক্সবাজার জেলার শাখার আহবায়ক ওয়াহিদুর রহমান রুবেল লিখিত বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে পিতা মুজিবের চরিত্র হনন করতে একটি গোষ্টি বঙ্গবন্ধুর নামে কথিত আত্মগোপনের ইতিহাস প্রচার করে যাচ্ছে। এতে জাতির শ্রেষ্ট সন্তান বঙ্গবন্ধুর আপোষহীন চরিত্র যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, তেমনি নতুন প্রজন্মের কাছে বিভ্রান্ত ইতিহাস রচনা করা হচ্ছে। আমরা চাই জাতির শ্রেষ্ট সন্তান বঙ্গবন্ধুর নামে সব ধরনের অপপ্রচার ও মিথ্যাচার বন্ধ করা হউক।

তিনি আরো বলেন, আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন “১৯৫৮ সালে সেপ্টম্বর মাসে শেষের দিকে ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলীর মর্মান্তিক মৃত্যুকে পুঁজি করে ইস্কান্দর মির্জা ৭ অক্টোবর দেশে সামরিক শাসন জারি করেন। মাত্র চারদিনের মাথায় ১২ অক্টোবর শেখ মুজিবকে আটক করা হয়। এ সময় তাকে দেড় বছর বিনা বিচারে আটক রাখে। কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে ৬টি ফৌজদারি মামলা দায়ের করে সরকার (প্রমাণ স্বরুপ-আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আসামি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জবানবন্দিতে তিনি নিজেই বলে গেছেন)। অথচ সামরিক শাসন জারির পর শেখ মুজিবুর রহমান নাকি পালিয়ে আত্মগোপনে এসেছিলেন কক্সবাজারের ইনানী চেংছড়িতে। ২০০৯ সাল থেকে এমন একটি কাল্পনিক ইতিহাস প্রচার করা হয়। ভিত্তিহীন উক্ত গল্পের উপর ভর করে একটি স্মৃতি জাদুঘর স্থাপন করা হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার সংগঠন বোয়াফ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নামে মিথ্যাচার বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

বঙ্গবন্ধুর নামে প্রচারিত কাল্পনিক উক্ত ইতিহাসে বলা হয় “সামরিক শাসন জারির পর ভিন্ন একটু সময় কাটানোর জন্য সাগর পথে পালিয়ে সোনাদিয়া হয়ে কক্সবাজারে আসেন। কক্সবাজারে এসে খবর দেন আওয়ামী লীগ নেতা একেএম মোজাম্মেল হককে। তিনি তৎকালিন ছাত্রলীগ নেতা লোকমান হাকিমকে দিয়ে ইনানীতে পাঠিয়ে দেন। বঙ্গবন্ধু আরাম আয়েশে থাকতে চাননি। চলে যান গহীন অরণ্যে। তাকে আশ্রয় দেন উপজাতির দাপুটে নেতা ফেলরং রোয়াজা চাকমা। তাকে রান্না করে খাওয়াতেন ছকিনা নামে এক মহিলা। অপরদিকে যে বাড়িতে বঙ্গবন্ধু আশ্রয়ে ছিলেন বলে প্রচার করা হয়, সে উপজাতি পরিবারের দাবি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধু তাদের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলেন। অত্যান্ত সুকৌশলে বঙ্গবন্ধুর নামে মিথ্যা,কাল্পনিক, ভিত্তিহীন ও উদ্যেশ্য প্রণোদিত ইতিহাস প্রচার করা হয় যেন তাদের আসল উদোশ্য সফল হয়।

আমার প্রশ্ন যদি ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারির পর বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকেন তবে কিভাবে তিনি পালিয়ে আসেন ? দ্বিতীয় প্রশ্ন, কক্সবাজার মহকুমা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৬২ সালে। তাহলে কিভাবে লোকমান হাকিম মাস্টার ১৯৫৮ সালে ছাত্রলীগের নেতা হয় ? ছকিনার পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন এক সাংবাদিকের শিখিয়ে দেয়া কথাই তিনি বলেছেন। তাকে ঘর বানিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়েছিলো। তাদের দাবি ছকিনা রান্না করে খাইয়েছিলো বলে প্রচার করলেও জমি দখল করতে ছকিনার পিতা ও ভাইকে রাজাকার বলতো সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা এবং চাকমার ছেলে।

জনাব মোজাম্মেল হক বা লোকমান হাকিম মাস্টার, ছকিনা কিংবা যাদেরকে জড়িয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে সবার প্রতি সম্মান রেখে বলছি ‘কাল্পনিক ইতিহাস প্রচার করতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সু-কৌশলে জড়িয়ে নিয়েছেন। যা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন বিভ্রান্তকর উদোশ্যপ্রণোদিত। আমার প্রশ্ন জাগে প্রয়াত নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হককে সম্মান দেয়া হচ্ছে নাকি অসম্মান করা হচ্ছে ? তাও ভাবতে হবে। আমরা জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি যদি ‘কাল্পনিক ইতিহাসের যদি কোন তথ্য প্রমাণ তাকে তবে কাগজপত্র নিয়ে বসতে বলুন। যদি প্রমাণ করতে না পারেন তবে পিতা মুজিবের নামে অপপ্রচার বন্ধ করে সঠিক ইতিহাস রচনা করেন।

বঙ্গবন্ধুর কাল্পনিক ইতিহাস রচনা করে উক্ত স্থানে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ১৯ জন বসবাসকারি পরিবারকে উচ্ছেদ করার জন্য মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু সর্বশেষ স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হক ও তার পুত্রের পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বর্তমানে উক্ত ভিটায় সুপারি বিক্রির জন্য ১৮ লাখ টাকায় লীজ দেয়া হয়েছে। রবিঅং চাকমা এ লীজ প্রদান করেন সোনারপাড়া এলাকার জনৈক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীকে। যদি প্রশাসন উক্ত জমি দখলে নিয়ে থাকেন, তবে রবিঅং চাকমা কিভাবে লীজ দিয়েছেন ? লীজের টাকা কেন প্রশাসন পায়নি ? এ টাকা গেল কোথায় ? কেন প্রশাসন জানেন না লীজের বিষয়টি ? তাই আমার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ অনলাইন এ্যক্টিভিষ্ট ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জনাব, কবির চৌধুরী তন্ময়’র পরামর্শে আজকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। এরপরও কোন ব্যবস্থা না হলে আদালতে যেতে বাধ্য হবো। আমরা জেনেছি যে, বিএনপি জামায়াতের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর চরিত্র হননের মিশনে নেমেছে একটি গোষ্ঠি। তাই এখন প্রকৃত তথ্য প্রচারের ভার আপনাদের উপর অর্পণ করলাম।

এ সময় সংগঠনের সদস্যসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা