বাংলাদেশ, , বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন আদালতে

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২০-০২-২৬ ১৩:৪৮:১৮  

ডেস্ক নিউজ

কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সবশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিকিৎসকদের দেয়া প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।

বুধবার বেলা ১ টার দিকে এই প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেয়া হয়। আদালত এই প্রতিবেদন দেখে খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত দেবেন।

এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসম্পর্কিত তিন অবস্থার তথ্য জানতে চান হাইকোর্ট।

মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুসারে খালেদা জিয়া অ্যাডভান্স থেরাপির জন্য সম্মতি দিয়েছেন কিনা, সম্মতি দিলে চিকিৎসা শুরু হয়েছে কিনা এবং বর্তমান তার কী অবস্থা তা জানিয়ে প্রতিবেদন বুধবারের মধ্যে দিতে বলা হয়।

২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালত বলেন, কোনো ধরনের ব্যর্থতা ছাড়াই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে প্রতিবেদনটি সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে দিতে হবে।

পরবর্তী আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার তা কার্যতালিকায় আসবে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সেদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এ সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, সগির হোসেন লিওন ও ফারুক হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

ওইদিন শুনানিতে জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা একমাত্র স্বাস্থ্যগত কারণে আবার আদালতে এসেছি। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা আগের থেকে অনেক খারাপ। তিনি ৫ মিনিটও দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। নিজের হাতে খেতেও পারেন না। খাবার খেলেও তিনি প্রায় বমি করেন।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যমকে বলেন, তার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এভাবে থাকলে তার কখন কী হয়ে যায় তা বলা যায় না। তাই আমরা তার জামিন প্রার্থনা করছি।

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসির প্রতি নির্দেশনা চেয়ে করা আবেদন তুলে ধরেন জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে তার স্বাস্থ্যগত সর্বশেষ অবস্থা কী, সে বিষয়ে একটা প্রতিবেদন চাইতে পারেন।’

শুনানিতে জামিনের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, এর আগে এ আদালতে একই আবেদন করা হয়েছে এবং আপিল বিভাগে খারিজ হয়েছে। আপিল বিভাগে খারিজ হওয়া আবেদন এবং এ আবেদন পুনরাবৃত্তি মাত্র।

আপিল বিভাগ তো বলেছেন উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তার সম্মতিতে সেটা করা হবে। এছাড়া তার চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধ বাংলাদেশে রয়েছে। এরপর হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়া এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দল ও পরিবারের সদস্যরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে তাতে অনুমতি মেলেনি।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় জামিন চেয়ে এর আগেও হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। কিন্তু অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত- এমন তিন বিবেচনায় হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩১ জুলাই সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে যান। কিন্তু খালেদা জিয়া জামিন পাননি।

১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে জামিন আবেদনটি খারিজ করে দেন। আপিল বিভাগের ওই রায়ে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট’ দেয়ার পদক্ষেপ নিতে।

সেই রায় ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়ার পর হাইকোর্টে নতুন করে জামিন আবেদন করার উদ্যোগ নেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ৩৬টি মামলার মধ্যে ৩৪টি মামলায় খালেদা জিয়া জামিনে আছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা