বাংলাদেশ, , মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

সেই ভুলে ভরা ব্যাটিং

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২০-০২-০৮ ০৪:৫৮:১৫  

ডেস্ক রিপোর্টঃ

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথমদিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। তিন রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, সেখান থেকে ২৩৩ রান খুব খারাপ নয়। কিন্তু লাল বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ভুলে ভরা সাদা-কালো ব্যাটিংয়ের গল্পটা তাতে বদলায়নি।

প্রথম আট ব্যাটসম্যানের ছয়জনই দুই অঙ্ক ছুঁয়ে জাগিয়েছিলেন বড় ইনিংসের সম্ভাবনা। সেখান থেকে পঞ্চাশ ছাড়াতে পারলেন শুধু মোহাম্মদ মিঠুন। বাকি সবাই ভালো খেলতে খেলতে মনোযোগ ধরে রাখতে না পারার পুরনো রোগে আক্রান্ত হয়ে ডুবিয়েছেন দলকে। প্রতিটি সম্ভাবনাময় ইনিংস ও জুটির অপমৃত্যু ঘটেছে উচ্চাভিলাষী শটে।

কন্ডিশন পাকিস্তানি পেসারদের অনুকূলে থাকলেও রাওয়ালপিন্ডির উইকেটে এমন কোনো জুজু ছিল না। তবু শুক্রবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই অভিষিক্ত ওপেনারকে শূন্য রানে ফেরান শাহিন শাহ আফ্রিদি। বিসিএলে মাত্রই ট্রিপল সেঞ্চুরি করা তামিম ইকবালও পাঁচ বলের বেশি টিকতে পারেননি।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাকে ফেরান মোহাম্মদ আব্বাস। শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দিলেও ব্যাটসম্যানদের সুযোগ হাতছাড়া করার দিনে ৮২.৫ ওভারে ২৩৩ রানেই থামতে হয় বাংলাদেশকে।

প্রায় ১৭ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট খেলতে নামা বাংলাদেশ এই সংস্করণে নিজেদের উন্নতির কোনো ছাপ রাখতে পারেনি প্রথমদিনে। পারেনি পুরোদিন টিকে থাকতে। গত বছরের শেষদিকে ভারত সফরের মতো বাজে ব্যাটিংয়ের ধারা থেকে বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসজুড়েই ছিল ভুলে ভরা ব্যাটিং। উইকেটে থিতু হওয়ার পরও কেউ ইনিংস লম্বা করতে পারেননি।

দারুণ বোলিংয়ের পাশাপাশি তিনটি সফল রিভিউয়ে পাকিস্তান ফিরিয়েছে তামিম ইকবাল, লিটন দাস ও মোহাম্মদ মিঠুনকে। ভারত সফরে ওপেন করা ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম ইনজুরির কারণে দলে নেই। এই সুযোগে অভিষেক হয়েছে তরুণ সাইফের। শুরুটা হল শূন্য দিয়ে।

শাহিন শাহর অফ-স্টাম্পের বাইরে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন সাইফ। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে দ্বিতীয় স্লিপে আসাদ শফিকের হাতে জমা পড়ে। পরের ওভারে মোহাম্মদ আব্বাসের বল পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন তামিম। আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় পাকিস্তান। তাতে সফলও হয় তারা।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে নাজমুল হোসেন শান্ত ও অধিনায়ক মুমিনুল হক চাপ কাটিয়ে উঠছিলেন। রানে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েও দলীয় ৬২ রানের সময় ছন্দপতন ঘটে মুমিনুলের। শাহিনের বলে ৩০ করে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক। ইনিংস লম্বা করতে পারেননি নাজমুলও (৪৪)। দু’জনই ফেরেন অকারণে বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে।

মাহমুদউল্লাহ ও মিঠুনও শুরুটা ভালো করেছিলেন। কিন্তু নাজমুল ও মুমিনুলকে দেখেও শিখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। শাহিনের ওয়াইড লেন্থের বল পয়েন্ট দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ (২৫)। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আসা ক্যাচ স্লিপে ঝাঁপিয়ে মুঠোয় জমান আসাদ শফিক।

গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পেতে যাচ্ছিলেন লিটন দাস। ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে একটুর জন্য বল স্টাম্পে যায়নি। উল্টো বাউন্ডারি পেয়ে যান এই কিপার-ব্যাটসম্যান। পরে দারুণ কিছু শট খেললেও ৩৩ রানে থামতে হয় তাকে। হারিস সোহেলের স্পিনে এলবিডব্লুর আবেদনে প্রথমে সাড়া দেননি আম্পায়ার। কিন্তু অনেক ভেবে রিভিউ নিয়ে লিটনকে ফেরায় পাকিস্তান।

বাংলাদেশ ১৬১ রানে ছয় উইকেট হারায়। এরপর মিঠুনকে ভালো সঙ্গ দিয়েছেন তাইজুল। হারিসকে তুলে মারতে গিয়ে ৭২ বলে ২৪ করে ফেরেন তাইজুল। ১৪০ বলে ৬৩ রান করা মিঠুনকেও রিভিউতে ফেরায় পাকিস্তান। মিঠুনের বিদায়ের পর চার রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ২৩৩ রানে অলআউট হয়।

৫৩ রানে চার উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সফলতম বোলার শাহিন আফ্রিদি। আলোক স্বল্পতায় দিনের খেলা একটু আগেভাগেই শেষ হওয়ায় কাল আর ব্যাটিংয়ে নামা হয়নি পাকিস্তানের।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা