বাংলাদেশ, , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে বিচারিক কার্যক্রম: আতংকে কর্মকর্তা ও বিচারপ্রার্থীরা

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২৩-০৭-০৮ ১২:৩৪:৪৭  

ওয়াহিদ রুবেল।।

ব্যবহার অনুপযোগী উঠেছে কক্সবাজারে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন। ফাটল দেখা দিয়েছে ভবনের পিলার, ভেঙে পড়ছে প্যালেস্টার। এতে যেকোন সময় বিচারপ্রার্থীদের অঙ্গ ও জীবনহানির মতো দূর্ঘটনা ঘটনার সম্ভবনা রয়েছে। আর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে আতংকে কাজ করে যাচ্ছেন আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ অবস্থায় দ্রুতই বিচারিক কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা।

ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগীর বিষয়টি নিশ্চিত করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশেক এলাহী শাহজাহন নুরী বলেন, ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয় থেকে আমাদের চিঠি দেয়া হয়েছে।

তথ্য মতে, ১৯৫২ সালে কক্সবাজারে বিচারক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পাশে একতলা কক্সবাজার জেলা জজ আদালত ভবন নির্মাণ করে তৎকালীন সরকার। বর্তমানে ভবনটিতে চীফ জুডিশিয়াল ও সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গেল কয়েক বছর ধরে ভবনের বিভিন্ন পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। খসে পড়ছে ছাদের পেলস্তারও। এ অবস্থায় চরম আতংক এবং ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা। এছাড়া পেলস্তার খসে পড়ে প্রাণহানী এবং অঙ্গহানীর আশঙ্কা করা হচ্ছে। দূর্ঘটনা এড়াতে ভবন থেকে বিচারিক কার্যক্রম সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী সমিতির নেতারা।

আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নুরুল ইসলাম সায়েম বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দ্রুত বিচারিক কার্যক্রম সরিয়ে নেয়া জরুরি। সম্প্রতি বিচার কার্য চলাকালীন সময় ছাদের পেলস্তার খসে পড়েছে। বড় দূর্ঘটনা এড়াতে এখন থেকে পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ার কথা জানিয়ে গেল ৫ জুন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা জজসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি দিয়েছে কক্সবাজার গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী।

চিঠিতে তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের পুরাতন একতলা ভবনটির (বর্তমানে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত ভবন হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে) কলামগুলি (পিলার) ফেটে গেছে এবং ছাদের সিলিং হতে পেলস্তার কনক্রিট ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে। ভবনের কাঠামো দুর্বল হওয়ায় মেরামত, আস্তর ও রং করে টেকসই হচ্ছে না। ফলে ভবনটি মানুষের অঙ্গ ও জীবনহানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিচার প্রার্থীদেরকে প্রতিদিন আতঙ্কের মধ্যে বিচারিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে আদালতের কার্যক্রম সরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজার জেলা জজ, চট্টগ্রাম গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম গণপূর্ত সার্কেল-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী, প্রকল্প সার্কেল-২, এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, গণপূর্ত উপ-বিভাগ-১/ইএম, কক্সবাজারকে অনুরোধ জানানো হয়। একই সাথে ৬ হাজার বর্গফুটের একটি টিনসেড সেমিপাকা ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ৭২ লাখ ১১ হাজার  ৮১৭ টাকা বরাদ্দ দেয়ারও সুপারিশ করা হয় চিঠিতে।

জানতেন চাইলে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশেক এলাহী শাহজাহান নুরী বলেন, ব্যবহার অনুপযোগী হলেও অন্যকোন উপায় না থাকায় এখনো ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে আমাদের। ভয় ও আতংকে থাকি কখন জানি পেলস্তার খসে মাথায় পড়ে। আশা করছি  বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত সরিয়ে নিতে ব্যবস্থা নিবে সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে কক্সবাজার গণপূর্ত অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় ব্যবহার অনুপযোগী বলে তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। সরকার টাকা বরাদ্দ দিলে আমরা ভবন করে দিবো। নতুন ভবন না করা পর্যন্ত হয়তো এ ভবনে বিচারিক কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছেন। বিচারিক কার্যক্রম তো আর থামিয়ে রাখা যাবেনা।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা