

বিশেষ প্রতিবেদকঃ
অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও স্বাস্থ্য নিবাস প্রকল্পের জন্য সরকার কক্সবাজার শহরের সার্কিট হাউস ও কলাতলী এলাকায় প্রায় শত একর ভূমি অধিগ্রহণ করে। কিন্তু গেল পঞ্চাশ বছর ধরে অধিগ্রহণকৃত শতকোটি টাকার জমি বেদখল হয়ে আছে। সেখানে গড়ে উঠেছে বহুতল আবাসিক ভবনও। সরকারি মূল্যবান জমি বেহাত হলেও তা জানেন না জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বিষয়টি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল। দীর্ঘদিন বেদখলে থাকা সরকারি মূলবান সম্পত্তি উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কক্সবাজার মহকুমায় অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও স্বাস্থ্য নিবাস প্রকল্পের জন্য তৎকালীন সরকার কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া সার্কিট হাউস এলাকা এবং কলাতলী আনবিক শক্তি কমিশন এলাকায় প্রায় শত একর জমি অধিগ্রহণ করেন। যা গেজেট আকারেও প্রকাশ করা হয়। অধিগ্রহণকৃত জমি বি.এস ১ নং খাস খতিয়ানের এবং গণপূর্ত বিভাগের নামীয় ৬নং খতিয়ানভুক্ত করা হয়। বিধি মতে ভূমি মালিকদের অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণও পরিশোধ করেছে সরকার। কিন্তু বাহারছড়া হিলডাউন সার্কিট হাউস এলাকায় খাস খতিয়ানের প্রায় ৫০ শতক মূল্যবান জমিই বেদখল হয়ে আছে। দখলদারগণ খাস জমিতেই বহুতল ভবন নির্মাণ করে ভাড়া বাসার ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন। দিনের পর দিন মূল্যমান জমি দখল হলেও উদ্ধারের জন্য কার্যত কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। বরং নিরব থেকে দখলে পরোক্ষ সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
খাস খতিয়ানের জমি বেদখলে আছে এটি জানেন না সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিল্লুর রহমান।
তিনি বলেন, খাস খতিয়ানের ৩১৬২ দাগের জমি বেদখল হয়ে আছে তা আমার জানা নেই। খোঁজ নেয়ার পর যদি জমি বেদখল হয়ে থাকে তবে তা উদ্ধারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজার সদর তহসিল অফিস সূত্র মতে, বিএস খাস খতিয়ানের ৩১৬২ দাগের প্রায় ৭১.৭৫ একর জমি রয়েছে। এ জমি বেদখল হয়ে আছে জানেন না তহসিলদা বা সহকারী কমিশনার। বেদখল হওয়া এ জমি দখল মুক্ত করা গেলে সরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর নিজস্ব অফিস ভবন করার সুযোগ পাবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
স্থানীয়রা বলছেন, শহরের হিলডাউন সার্কিট হাউস ও কলাতলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের পার্শ্বে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা রাষ্ট্রীয় স্থাপনার নিরাপত্তার হুমকিস্বরুপ।
জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদফতর কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন কিছু জমি বেদখল রয়েছে, কিছু জমিতে মামলা রয়েছে। আর কিছু বেদখল জমি উদ্ধার করা হয়েছে। ধীরে ধীরে সব জমি উদ্ধার করা হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আমিন আল পারভেজ বলেন, সার্কিট হাউস এলাকায় গণপূর্ত বিভাগের জমি রয়েছে। খাস খতিয়ানের জমি বেদখলে কিনা সেটি জানা পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।