বিষ খেয়ে হেঁটে গিয়ে মায়ের কাছে ক্ষমা চান স্বামী-স্ত্রী

প্রকাশিত: ৯:৫১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২২

নাটোরের বড়াইগ্রামে সুদি মহাজনের চাপ ও পারিবারিক কলহের জের ধরে একসঙ্গে স্বামী ও স্ত্রী বিষাক্ত ট্যাবলেট সেবনে করেন। এতে স্ত্রী বিথী আক্তার (২৩) মারা গেলেও স্বামী ওমর ফারুক (৩২) সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শুক্রবার উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

চিকিৎসাধীন ওমর ফারুক কালিকাপুর মহল্লার মফিজ উদ্দিনের ছেলে। নিহত বিথী ওমর ফারুকের ২য় স্ত্রী বলে জানা গেছে।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় দেড় বছর আগে ফল ব্যবসায়ী ওমর ফারুক উপজেলার মৌখাড়া এলাকার আবুল বাশারের মেয়ে বিথীকে বিয়ে করে পাশের হালদারপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে তাদের সংসারে কলহ চলছিল। তাছাড়া ব্যবসার প্রয়োজনে ফারুক বিভিন্ন এনজিও এবং সুদি মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ নেন। বর্তমানে ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় বেশির ভাগ সময় দোকান বন্ধ রেখে তিনি বাসাতেই থাকতেন।

শুক্রবার সকালে তারা দুজন একসঙ্গে বিষাক্ত ট্যাবলেট সেবন করেন। পরে তারা হেঁটে ফারুকের পৈতৃক বাড়িতে যান। সেখানে ফারুকের মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা দুজনই পরপারে চলে যাবেন বলে জানান।

এ সময় স্বজনরা বুঝতে পেরে তাদের প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিকে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিথী আক্তার মারা যান। ওমর ফারুক বর্তমানে রাজশাহী বেসরকারি নিউ লাইফ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ওমর ফারুকের মা ফেরদৌসী বেগম জানান, দ্বিতীয় বিয়ে করায় কিছুটা মান-অভিমান থাকলেও সংসারে এ নিয়ে তেমন কোনো কলহ ছিল না। মূলত সুদি মহাজন ও বিভিন্ন এনজিও কর্মীদের চাপে সে একপ্রকার পলাতক জীবনযাপন করছিল। তাদের চাপেই আমার ছেলে ও ছেলের বউ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম জানান, নিহতের লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার অনেক টাকা ঋণ রয়েছে বলে শুনেছি। এছাড়া একাধিক বিয়ে করা নিয়েও পারিবারিক কলহ ছিল বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ আগস্ট একইভাবে সুদি মহাজনদের চাপে বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর নতুন বাজার মহল্লার মোবাইল ব্যবসায়ী শরীফুল ইসলাম সোহেল (৩৪) ধারালো বঁটি দিয়ে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেন।