নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের ৪ উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ৩০২ জন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে কেন্দুয়ায় ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুটি পদ পেতে ৯০ জন প্রার্থী হয়েছেন।
অপরদিকে মোহনগঞ্জ উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৪ জন। খালিয়াজুরী ও মদনে প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে ৬৬ ও ৬২ জন করে। কয়েকটি পৌরসভা এবং কলেজ কমিটিতেও দেখা দিয়েছে এমন রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘অনেক ইউনিটের কমিটি দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ। নয়া কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়েছেন। তাদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা একটু বেশি।’
তিনি জানান, গত ১৫ ও ১৬ জুলাই দুই দিন জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন চারটি উপজেলা, তিনটি পৌরসভা ও পাঁচটি সরকারি কলেজ শাখার শুধুমাত্র সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) আহ্বান করা হয়।
এতে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা বিপুল সাড়া দেন। তারা নিজ নিজ এলাকা থেকে মিছিল, মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে এসে জেলা শহরের ছোটবাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন। জমা পড়া জীবনবৃত্তান্তসমূহ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১২টি ইউনিটের ২৪টি পদের জন্য মোট ৫২৩ জন প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে চারটি উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ৩০২ জন।
তাদের মধ্যে কেন্দুয়া উপজেলায় সভাপতি পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৬
৬ জন, মোহনগঞ্জ উপজেলায় সভাপতি পদে ২৭ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৫৭ জন, খালিয়াজুরী উপজেলায় সভাপতি পদে ২০ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৪৬ জন এবং মদন উপজেলায় সভাপতি পদে ২৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৯ জন।
একইভাবে পাঁচটি কলেজ শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাত্র ১০টি পদেও প্রার্থী হয়েছেন ১৩৯ জন। তাদের মধ্যে, নেত্রকোনা সরকারি কলেজ শাখায় সভাপতি পদে ২৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৩ জন, মোহনগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজ শাখায় সভাপতি পদে ১১ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মদনের হাজী আব্দুল আজিজ সরকারি কলেজে শাখায় সভাপতি পদে ৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫ জন, কেন্দুয়া সরকারি কলেজে শাখায় সভাপতি পদে ৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন এবং খালিয়াজুরীর কৃষ্ণপুর হাজী আকবর আলী ডিগ্রি কলেজ শাখায় সভাপতি পদে ৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক ১১ জন।
এদিকে জেলার তিনটি পৌর শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ৬টি পদে প্রার্থী হয়েছেন ৮২ জন। প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, মদন পৌর শাখায় সভাপতি পদে ১৫ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১০ জন, মোহনগঞ্জ পৌর শাখায় সভাপতি পদে ১২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২৭ জন এবং কেন্দুয়া পৌর শাখায় সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৮ জন।
মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ফয়েজ রহমান প্লাবন বলেন, ‘আমি উপজেলা শাখার সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছি। একই পদে আমার সঙ্গে আরও ২৬ জন জমা দিয়েছেন। এত প্রার্থীর ভিড়ে জেলার নেতৃবৃন্দ আশা করি ত্যাগী, সৎ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত সৈনিকদের মূল্যায়ন করবেন।’
নেত্রকোনা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী সৈয়দ আল রাকিব বলেন, ‘নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্ধিতা খুব ভালো। আশা করি জেলার নেতৃবৃন্দ সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। যাতে করে দেশের প্রাচীন এই ছাত্র সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব সংগঠনের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে পারেন।’
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান বলেন, ‘নেতৃত্ব বিকাশে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দরকার। বেশি প্রার্থী হলেও আমরা প্রকৃত ছাত্র, সৎ, ত্যাগী, মেধাবী এবং দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের বাছাই করেই কমিটি গঠন করব। যারা আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে সংগঠনের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখবে।’
বিপুল সংখ্যক প্রার্থী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আওয়াল শাওন বলেন, ‘নেত্রকোনা জেলায় ছাত্রলীগই সবচেয়ে বেশি সুসংগঠিত ও বড় আকারের ছাত্র সংগঠন। এখানে নেতাকর্মীর সংখ্যাও অগণিত, হাজার হাজার। তাই সঙ্গত কারণেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশি। তাছাড়া বেশকিছু ইউনিটের কমিটি দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ। সেসব ইউনিটের পদপদবি পেতে অনেকে বহু আগে থেকে সাংগঠনিক কাজ করে আসছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা যোগ্যদের কমিটিতে নিয়ে আসব। তাছাড়া আমরা শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য সিভি আহ্বান করলেও অনেকে অন্যান্য পদ পাওয়ার আশাতেও ওই দুটি পদে সিভি জমা দিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মুনতাকিম হোছাইন
বার্তা সম্পাদক: ইকবাল হোছাইন
মেইলঃ bangladeshpaper71@gmail.com
অফিসঃ ০১৮৮-৬৬১০৬৬৬ বার্তা প্রধান ০১৮৫৭৬৭১৯৪৩
কপিরাইট আইন,২০০০ © অনুসারে বাংলাদেশ পেপার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত