বাংলাদেশ, , বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ঘরের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন আহম্মদ ও জামেনা বেগমের

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২২-০৩-২৫ ০৮:৩২:৩১  

জীবনের শেষ লগ্নে এসেও একটি ঘরের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন। জীবন বাঁচানোর তাগিদে রাত কাটাতে হচ্ছে সরকারি জমিতে একটি ভাঙা ঘরে। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসেও দু’মুঠো ভাত আর থাকার মত একটি ঘরের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে ৮২ বছর বয়সী আহম্মদ আলীকে।

জীবন বাঁচানো ও জীবিকার তাগিদে শেষ বয়সেও ভ্যানে ভর দিয়ে সারাদিনই অনেক কষ্ট করে ঘুরতে হয় পথে পথে। নিজের একটি ভালো ঘরের আশায় এখনো তিনি স্বপ্ন দেখেন, হয়তো কোন একদিন শেষ হবে অসহায় আহম্মদের এই জীবন সংগ্রাম।

বলছি, পাংশা উপজেলার কসবামাঝাইল ইউনিয়নে কুঠিমালিয়াট গ্রামে ভূমিহীন আশ্রায়ন প্রকল্পের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে থাকা আহম্মদ আলীর পরিবারের কথা। বাড়িতে ভাঙ্গা টিনের জোড়াতালি দিয়ে তৈরি একটিমাত্র ঘর, যা বসবাসের অনুপযোগী। যেখানে একাই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তিনি আর নিকট আত্মীয় ও সমাজ যেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী৷

আহম্মদ আলী একসময় কাজেও ছিলেন বেশ দক্ষ। বয়সের ভাড়ে নূয়ে পড়ায় এখন আর পারেন না আগের মত কাজ করতে। বিয়ের পর পিতা-মাতার সাথে থাকা হয়ে ওঠেনি বেশিদিন। তার পরিবারে এখন বৃদ্ধ স্ত্রী ছাড়া কিছুই নেই। সময়ের ব্যবধানে এখন শুধুই কষ্টময় জীবন।

কথা হয় আহম্মদ আলীর স্ত্রী জামেনা বেগমের (৬৬) সাথে। কথার মাঝে তিনি বলেন, আমার পরিবার অনেক গরিব। অন্যের বাসায় কাজ করে কোনমতে জীবনযাপন করি। কোনরকমে থাকার মত একটি ভাঙা ঘর ছাড়া কিছুই নেই আমাদের। আমার স্বামী তিনি নিজেও সকাল হলেই ঘুম থেকে উঠে বের হয়ে যান ভ্যান নিয়ে। সারাদিন বাইরে থেকে যা পান তা দিয়েই খাবার খান। কোন কোন দিন না খেয়েই চলে যায় তার। রাতে এসে শুধু ঘুমান।

কেমন আছেন? দিনকাল কেমন যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে আহম্মদ আলী বলেন, ভালো নেই। আমার থাকার জন্য সরকারের জায়গায় একটা ভাঙা ঘর, নিজের চলাচলের জন্য একটি ভ্যান গাড়ি আর স্ত্রী ও নিজের বেঁচে থাকার জন্য চিকিৎসার টাকার যোগান দিতে সারাদিন ছুটে চলা৷ সহধর্মিণী ছাড়া কিছুই নেই আমার।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অসহায় এই পরিবারকে শান্তিতে ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেবেন- এমনটি প্রত্যাশা আহম্মদ আলীর। সেই সঙ্গে দ্রুত স্থায়ী আবাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আহম্মদ আলী।

স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা লালটু (৩৭) বলেন, আহম্মদ চাচার থাকার জায়গা নেই। এখানে প্রায় ৩০ বছর ধরে থাকছে। যখন প্রথম এসেছিল আমার বাবা ও আশপাশের লোকজন মিলে থাকার জন্য একটা ঘর করে দিয়েছিল। এরপর কিস্তি তুলে নিজের খাবার ও ওষুধ কেনার জন্য একটা ভ্যান কেনেন। তার স্ত্রীও অসুস্থ। তাই একটা ঘর দেওয়ার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলী বলেন, পর্যায়ক্রমে সকল ভূমিহীনদের আবাসনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা