বাংলাদেশ, , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার পৌর আ.লীগ: কাউন্সিলর তালিকায় ইয়াবা ও মানব পাচারকারী!

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২২-০৩-২৪ ০১:৩২:২০  

কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার পৌরসভা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে প্রণয়ন করা কাউন্সিলর তালিকায় ইয়াবা ও মানব পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তালিকা পুনরায় প্রণয়ন ও আগামী ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিলের তারিখ পুনরায় নির্ধারণের দাবিতে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত আবেদনও করা হয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি হন পৌরসভার বর্তমান মেয়র মুজিবুর রহমান আর সাধারণ সম্পাদক হন উজ্জ্বল কর। পরবর্তীতে মুজিবুর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হলে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন শুরু করেন সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম। নিয়মানুসারে ২০১৭ সালে সেই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। কিন্তু নানা কারণে আর সম্মেলন হয়নি।

তবে, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যায়ে দলকে আরো সুসংগঠিত করতে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন ও কাউন্সিল করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪ মার্চ কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল ঘোষণা করেন কক্সবাজারের দায়িত্ব পাওয়া কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

সেই মতেই বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

২৯২ জন কাউন্সিলরের তালিকা দলীয় কার্যালয়ে টাঙানো হয়েছে। সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উম্মুক্ত মাঠে প্রথম অধিবেশনের আলোচনা শেষে বিকেল ৩টায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

তবে, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালাহ উদ্দিন সেতু ২২ মার্চ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সম্পাদক বরাবর লিখিত একটি আবেদন দিয়েছেন।

আবেদনে সেতু উল্লেখ করেন, ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য পৌর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সম্পন্নের লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কাউন্সিলর তালিকা টানানো হয়েছে ২১ মার্চ। কাউন্সিলর তালিকায় ওয়ার্ড ভিত্তিক কাউন্সিলের শুধুমাত্র নাম দেয়া হলেও পিতার নাম কিংবা মোবাইল নম্বর সংযোজন করা হয়নি।

অথচ একই নামে দলের একাধিক নেতাকর্মী রয়েছে। এছাড়া এমন অনেককে কাউন্সিলর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, যারা কক্সবাজার শহরের ভোটার নয়। এছাড়াও উপজেলার অন্তর্গত ইউনিয়ন থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত চেয়ারম্যানকেও উক্ত কাউন্সিলর তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কাউন্সিলর তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সালাহ উদ্দিন সেতু দাবী করেন, পৌর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আজ্ঞাবহ অযোগ্য, বিতর্কিত ও দলের সুনাম বিনষ্টকারী, ইয়াবা ও মানব পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে কাউন্সিলর তালিকায় রাখা হয়েছে। বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেদের স্বপদে বহাল রাখতে পৌর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সভায় উপস্থাপন না করে স্বজনপ্রীতি করে এ কাউন্সিলর তালিকা প্রণয়ন করেছেন।

তিনি আরও দাবি করেন, সম্মেলনে তিনিসহ একাধিক প্রার্থী সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তাদেরকে কাউন্সিল থেকে বিরত রাখতে অপকৌশল হিসেবে বিতর্কিত এ তালিকা প্রণয়ন করা হয়। তালিকার বিষয়ে জেলা সভাপতি-সম্পাদককে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওনারা পৌর সভাপতি-সম্পাদককে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশনা দিলেও এর কোন সুরাহা হয়নি।

এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ সঠিক নয়, জেলা আওয়ামী লীগকে কেউ অভিযোগ করেনি। আর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর লিস্টে মোবাইল নম্বর দেয়ার কোন নিয়ম নেই। গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে এই তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং জেলা আওয়ামী লীগ বিষয়টি অবগত।’

মোবাইল নাম্বার না দিলেও, পিতার নাম দিলে কাউন্সিলর শনাক্ত করা সহজতর হতো, এ বিষয়ে পৌর সভাপতি নজিব বলেন, ‘নিয়ম নেই। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই।’


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা