ভাষার মাস, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেই শহীদ মিনার

আকর্ষণীয় পাঠদান ভবন থাকলেও অধিকাংশ বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার!

রাজবাড়ীতে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। ১৯৫২ সালে মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য জীবন বিলিয়ে দেওয়ার ৬৯ বছর পরও শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও শিক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে, অর্থ বরাদ্দ না থাকাসহ নানা কারণে দীর্ঘদিনেও এসব স্থাপনা নির্মাণ করা যায়নি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীতে ৯০ শতাংশ প্রাথমিক, ৭০ শতাংশ মাধ্যমিক ও ৬৫ শতাংশ মাদ্রাসায় নেই শহীদ মিনার।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজবাড়ীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৮২টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে ৪২টি বিদ্যালয়ে, অর্থাৎ শহীদ মিনার আছে প্রায় ১০ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। নেই প্রায় ৯০ শতাংশ বিদ্যালয়ে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমি জানান, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের কোনো বরাদ্দ নেই। তবে একটি নির্দেশনা এসেছে সব বিদ্যালয়ে একই আকার ও আয়তনের শহীদ মিনার নির্মাণ করতে হবে। যারা নিজস্ব উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মাণ করবে, তাদের জন্যই এই নির্দেশনা।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায়, জেলার ৫টি উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ১৪৮টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার নেই ৯৩ টিতে, অর্থাৎ ৭০ শতাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। এছাড়াও ৭৪টি মাদরাসা মধ্যে ১টিতে ও ৪৩টি কলেজের মধ্যে ১৩টিতে রয়েছে শহীদ মিনার।

শহীদ মিনারের গুরুত্ব তুলে ধরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুন্নাহার চৌধুরী বলেন, ‘বাঙালি চেতনা ও আমাদের জাতিসত্তার প্রথম উন্মেষ ঘটে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে। ভাষা শহীদদের প্রতি যথার্থ মর্যাদা দিতে হলে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরি।’

এ সম্পর্কে পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরিদ হাসান ওদুদ বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, এটি আমাদের জন্য লজ্জাজনক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদনের শর্তের মধ্যে শহীদ মিনার নির্মাণ বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। ভাবতে অবাক লাগে, যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয়, সেই জাতির দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।’