বাংলাদেশ, , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রয়াত এড এ.কে.আহমদ হোসাইনের—৩য় শাহাদাত বার্ষিকী

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-১১-০৮ ০৫:৩২:১২  

সারজিয়া আদনানঃ

এডভোকেট এ.কে আহমদ হোছাইন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির হাত ধরে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হয়ে দেশের জন্য লড়েছেন। শেষ বয়সেও কক্সবাজার জেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি হয়ে মানব সেবায় নিজেকে নিয়জিত রেখেছেন। আজ তার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।

তিনি কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের পশ্চিম হলদিয়া সিকদার পাড়া(মৌলভী পাড়া) গ্রামে ১৯৪০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম হাজী আবদুল আলী সিকদার মাতা মরহুমা লালমতি বেগম।

একে আহমদ হোছাইন এর শৈশবের শিক্ষা জীবন কাটে নলবনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এর পর রত্নাপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক এ ভর্তি হন।১৯৫৬ সালে তিনি মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৮ সালে চট্টগ্রাম কলেজ হতে তিনি আই এ পাশ করেন। ১৯৬০সালে তিনি বিএপাশ করে এর পর ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন।১৯৬২সালে তিনি এম এ পাশ করেন। ১৯৬৭ সালে চট্টগ্রাম আইন কলেজ হতে তিনি এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।

আহমদ হোছাইন এর রাজনীতিতে পদার্পন ঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ অধ্যয়ন কালে।সে সময় তিনি শেখ ফজলুল হক মনি, সুরনজিত সেন গুপ্ত, ড.ওয়াজেদ মিয়া, আজমত আলী সিকদার সহ অনেকের সানিধ্য লাভ করেন। সে সময় তিনি ছাত্রলীগ এর একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। শেখ ফজলুল হক মণি র নির্দেশ মতে গোলাম রব্বান এম.এ. কে আহবায়ক ও আহমদ হোছাইন কে যুগ্ম আহবায়ক করে যুবলীগের কক্সবাজার কমিটি গঠন করা হয়।

পরবর্তী সময়ে সাংবাদিক ও কৃষক নেতা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম এর হাত ধরে তিনি কৃষক লীগে যোগ দেন। তিনি সে সময় কৃষক লীগ কক্সবাজার জেলার যুগ্ম আহবায়ক নিযুক্ত হন।এর পর তিনি উখিয়া থানা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি নিযুক্ত হন।

১৯৭৪সালে তিনি কক্সবাজার এ আইন পেশায় যোগদান করেন। ১৯৮২সালে তিনি কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগ এর সভাপতি দীর্ঘ নয় বছর দায়িত্ব পালন করেন। সে সময়ে তিনি একই সাথে জেলা আওয়ামীলীগ এর সদস্য, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক হিসেবে ও বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা একে এম মোজাম্মেল হক মৃত্যুবরন করলে কক্সবাজার এ আওয়ামীলীগ পরিবারে এক শুন্যতা সৃষ্টি হয়।

সে ২০০৭ সালের ২১সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব নেন।৩১জানুয়ারী২০১৫সাল পর্যন্ত তিনি নিষ্ঠার সাথে সে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৫ সালে তিনি কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।সে সময় তিনি নিজ খরচে জজকোর্ট এ যাওয়ার জন্যে ফুট ব্রিজ করে দেন।

মরহুম এ কে আহমদ হোছাইন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে দেশ মাতৃকার মানুষের স্বাধীনতার জন্যে লড়াই করেন।

মরহুম আহমদ হোছাইন বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় ভুমিকা রাখেন। তিনি কক্সবাজার আদর্শ মহিলা কামিল মাদ্রাসা,কক্সবাজার সিটি কলেজ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি আট ছেলে ও ছয় মেয়ের জনক। তাঁর তিন ছেলে আইন পেশায় ও অন্যান্যরা স্ব স্ব ভাবে প্রতিষ্ঠিত। প্রসঙ্গত উনার সর্ব কনিষ্ঠ পুত্র শাখাওয়াত হোছাইন বর্তমানে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এবং অন্যান্য পুত্ররাও আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.কে আহমদ হোছাইন কক্সবাজার এ আওয়ামীলীগ এর একজন ত্যাগী নেতৃত্ব। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দেশ রত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি কক্সবাজার এ আওয়ামী পরিবার কে আগলে রেখে ছিলেন। প্রসঙ্গত তিনি কক্সবাজার জেলায় আইনজীবী হিসেবে অসহায় মানুষের পাশে থাকায়, অনেকে তাকে “গরিবের উকিল” বলেও সম্বোধন করতেন।

২০১৮সালের ৮ই নভেম্বর দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর ইন্তেকাল করেন। উনার মৃত্যুতে পুরো কক্সবাজারের রাজনৈতিক নেতা কর্মী ছাড়াও সকল শ্রেনীর মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল।

আজ এই বরেণ্য রাজনৈতিক ব্যক্তি মরহুম আহমদ হোছাইন এর ৩য় শাহদাত বার্ষিকীতে কক্সবাজার জেলার রাজনৈতিক বিভিন্ন নেতা কর্মী সহ বিভিন্ন শ্রেনীর ব্যক্তিবর্গ গভীর শ্রদ্ধার সাথে এই নেতাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা