বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

আইনপেশায় নতুনদের নেওয়ায় এতো অনিহা কেন ?

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-১০-১২ ১৭:১৬:৪০  

আইনপেশা একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশা হিসাবে সমাজে বিবেচিত। এটি একই সাথে সমাজের ও একটি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গনও বটে। রাষ্ট্রের প্রধান তিনটি অংশ লেজিসলেটিভ, এডমিনিস্ট্রেটিভ ও জুডিশিয়ারির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা যেখানে মূখ্য ভুমিকা পালন করে আইনজীবীরা। তাছাড়া জনপ্রতিনিধি থেকে রাষ্ট্র প্রধান হওয়াতেও আইনজীবীদের সম্ভবনা ও সুযোগ থাকে অন্য পেশাজীবীদের থেকে বেশী।

কিন্তু ভবিষ্যৎ আইনজীবী তৈরীতে কিংবা তরুন আইনজীবীদের সততার ওপর টিকে থাকতে সিস্টেম কতটা যত্নশীল?

নিয়মিত পরীক্ষা না হওয়াটাই যেন নিয়মে পরিনত হয়েছেঃ

বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে সবার সামনে প্রতীয়মান যে আইনজীবীদের অন্তর্ভুক্ত প্রক্রিয়া বা বার কাউন্সিলের পরীক্ষা নিয়মিত হচ্ছে নাহ। অথচ সুপ্রিম কোর্টের আদেশ আছে ছয় (০৬) মাস পর পর পরীক্ষা নেওয়ার। যখন একবছর বা তার বেশী সময় নিয়েও একটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় না, তখন একজন শিক্ষানবিস আইনজীবীর মনোবল ভেঙ্গে যায়, প্রাকটিসের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা না হওয়ায়,তারা সঠিকভাবে প্রস্তুতিও নিতে পারে নাহ। এর ফলস্বরূপ একটা বড় অংশ অকৃতকার্য হয়ে যায়। ফলে হতাশা আরো বেড়ে যায়।

শিক্ষানবিশকালীন নেই কোন সম্মাননা, নেই আদালতে কোন স্থানঃ

শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা শিক্ষানবিশকালীন সময়ে শেখায় যে মনোযোগ করবে,কিন্তু তাদের না আছে সম্মান, না আছে সম্মাননা। এমনকি কোর্টে তাদের বসার কোন বিশেষ স্থান ও নেই। একটি ফী নিয়ে যেমন তাদের কার্ড, টাই দেওয়া হয় তেমনি একটা স্থান যদি তাদের জন্য থাকতো তবে তারাও নিজেদেরকে আদালতের একটি অংশ মনে করতো,কিছুটা হলেও হতাশা কাটানো যেতো। সরকারিভাবে একটি সম্মাননা থাকলে অনেকেই সিনিয়র হতে প্রাপ্ত হাজিরা প্রতি ২/১ শত টাকার জন্য হয়তো এতো দৌড়ঝাপ করতো নাহ।

বার কাউন্সিলে পাশ করেও যেন স্বস্তি নেইঃ

আপনি হয়তো বার কাউন্সিলের কঠিন ও অনিশ্চিত পরীক্ষায় পাশ করলেন, ভাবলেন এবার আর ঝামেলা নাই। কিন্তু নাহ এখানেও একটা চাপ আছে সেটা হলো আপনার একটা বড় অংকের অর্থ খরচ করে বারের মেম্বারশীপ অর্জন করতে হবে। মনে করতে পারেন এ আর এমন কি পাঁচ দশহাজার টাকাই তো। কিন্তু নাহ এটাও নির্দিষ্ট নয়। আপনার এক্ষেত্রে এসেও কোন সঠিক দিকনির্দেশনা নেই। যেমনঃ মেহেরপুর বারের মেম্বার হতে হলে আপনাকে দশ হাজার টাকা গুনতে হবে,আবার আপনি যদি সিলেট বারের মেম্বার হতে চায় তবে আপনার গুনতে হবে প্রায় ত্রিশ (৩০) হাজার টাকা। কি একটু অবার লাগলো? তাহলে চিন্তা করেন যদি আপনি ফরিদপুর বারের মেম্বারশীপ নিতে চান তাহলে আপনার গুনতে হবে প্রায় এক (০১) লক্ষের বেশী টাকা!!
ভাবা যায়! একজন গ্রাজুয়েশন করা মানুষ দৈনিক ১/২ শত করে পেয়ে বা না পেয়ে, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে, কঠিন পরীক্ষায় পাশ করে, আবার যদি তার শুধু মেম্বারশিপ নিতেই লাগে লক্ষাধিক টাকা তাহলে তার থেকে সৎ ও ন্যায় প্রাকটিসের আশা রাষ্ট্র বা সমাজই কিভাবে করবে?

তাই সিস্টেম যদি এই সমস্যা গুলোর দিকে এখনই নজর না দেয় তবে ভবিষ্যৎ এ আমরা একটি সুন্দর আইন অঙ্গন কিভাবে আশা করতে পারি?

নাজমুল হোসেন
ভাইস চেয়ারম্যান
ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি অব ল এন্ড হিউম্যান রাইটস্


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা