বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

রোহিঙ্গা সুলতানের চার প্রজন্ম বাংলাদেশে!

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-০৮-০১ ২১:২৪:২৮  

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

৭৫ বছর বয়সী সুলতান আহমদ জন্মসূত্রে মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। ১৯৮৫ সালে জীবিকার তাগিদে অবৈধভাবে সাগরপথে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সেই থেকে তিনি পরিবারসহ কক্সবাজার শহরে বসবাস করছেন। শুরুর দিকে জেলে হিসেবে কাজ করলেও তিনি এখন শহরের পাহাড়তলী ইসুলুঘোনায় প্রতিষ্ঠিতমুখ।

এখন তাঁর চার পুরুষের রয়েছে বাংলাদেশী পরিচয়পত্র। ছেলে মেয়ে নাতী নাতনী সহ অনেকেই কক্সবাজারে প্রতিষ্ঠিত। অনেকে আবার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারী প্রতিষ্টানে চাকরী করছেন।
শহরের পাহাড়তলী ইসুলুঘোনা এলাকার একটি চায়ের দোকানেই সুলতান আহামদ প্রকাশ ভান্ডারী সুলতানের সাথে দেখা।

ওই সময় নিজর সম্পর্কে তিনি বলেন,“ আমি ও আমার স্ত্রী বুলু ১৯৮৪/৮৫ সালের দিকে বার্মা (মায়ানমার) থেকে বোটে (ইঞ্জিন চালিত মাছ ধরার ট্রলার) করে টেকনাফে আসি। এর কয়েকদিন পর কাজের জন্য আমরা কক্সবাজার আসি। এখানে এসে অনেক ধরনের কাজ করেছি সংসার করেছি। আমি যখন আসি তখন এখানে পাহাড় আর জঙ্গল ছাড়া কিছুই ছিলনা। এগুলো আমরা আবাদ করেছি।”

তিনি আরো বলেন, আমার ছেলেরা শাহআলম, নুরুল আলম, শামসুল আলম, জাফর আলম, আবু আলম, বদি আলম, শফি আলম মাছের ব্যবসা করে। আমার  নাতী নাতনীদের মধ্যে অনেকে এখন এদেশে প্রতিষ্ঠিত। আমার এক নাতি মাহাবু আলম মাহবু ইঞ্জিনিয়ার, আরেক নাতনীর স্বামী সাতকানিয়ার আলেম নুরে বাংলা (নুরে বাংলা ইতিমধ্যে সরকার বিরুদ্ধে উস্কানি কর্মকান্ডের জন্য বেশ কয়েকবার গ্রেফতারও হয়েছিল)।

ভান্ডারী সুলতান আরো  বলেন, শহরের পাহাড়তলীতে তার জানামতে হাজার বিশেক রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তবে সব রোহিঙ্গা খারাপ না কিছু আছে অত্যন্ত খারাপ। বিশেষ করে বর্তমানে পাহাড়তলী সহ আশপাশে যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছে সবাই কোন না কোন রোহিঙ্গার ছেলে অথবা নাতী।

তিনি নিজেই বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে তার চার প্রজন্ম আছে অর্থাৎ নাতীর ঘুরের পুতিও সে দেখেছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর কক্সবাজার জেলা সাধারন সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ,সুলতান ভান্ডারীর কমপক্ষে ১০০ জন বংশধর এদেশের নাগরিকত্ব নিয়েছে। এভাবে আরো কয়েকটি পুরাতন রোহিঙ্গা পরিবার আছে যারা এখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমাজে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এর ফলে রোহিঙ্গারা সহজেই এখানে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। আবার অনেক স্থানীয় তাদের ছেলে মেয়ে বা নাতী নাতনী বিয়ে করে আত্বীয়তা করেছে ফলে কেউ তাদের সাথে ঝামেলায় যেতে চায় না।
তিনি আরো বলেন, পুরাতন রোহিঙ্গাদের তালিকা করে তাদের বাংলদেশী জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করতে সরকারের উদ্যোগ নেয়া দরকার।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা নির্বাচন অফিসার শাহাদত হোসেন বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশের আনাচে কানাচে এভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশী পরিচয়পত্র ব্যবহারকারী রোহিঙ্গাদের তালিকা  তৈরির কাজ চলছে।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা