বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটন এলাকায় অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করতো সাবেক শিবির ক্যাডার এনাম

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-০৬-১৬ ২২:১২:৫২  

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অবশেষে র‌্যাবের জালে ধরা পড়েছে কক্সবাজার শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও বহু মামলার পালাতক আসামী ও সাবেক শিবির ক্যাডার লাইট হাউজ পাড়া এলাকার এনাম বাহিনীর প্রধান এনামুল কবির (৩২) প্রকাশ এনাম। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ হাজার পিস ইয়াবা। অথচ গ্রেফতার হওয়ার কয়েক মাস আগেও নিজের ফেইসবুক আইডিতে ইয়াবার লাগাম টেনে ধরতে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ইয়াবা ব্যবসায়ী এনাম।

মঙ্গলবার রাতে শহরতলীর লিংক রোড় এলাকার মেরিন সিটি শপিং সেন্টার এলাকা থেকে তাকে আটক করেছে র‌্যাপিড একশান ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১৫। তার নেতৃত্বে পর্যটন এলাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ হতো বলে জানিয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

গ্রেফতার এনাম জেলা শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন নেতা শহরের কলাতলীর লাইট হাউস পাড়া এলাকার মৌলভী মো. আলমগীরের ছেলে। এনাম’ বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক। সে নিজেকে জেলা যুবলীগ নেতা দাবি করে করেন।

তার আটকের বিষয়টি বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী নিশ্চিত করেছেন।

তবে, এনামকে কৌশলে ইয়াবা উদ্ধার ঘটনা ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার বাবা জামায়াত নেতা আলমগীর।

স্থানীয়দের মতে, এনামের পিতা মৌলভী আলমগীর জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা শাখার সাবেক সভাপতি। সে সূত্রে এনাম ছাত্র শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডার হিসেবে কর্মকান্ড চালাত। কিন্তু আওয়ামী লীগ পর পর ক্ষমতায় থাকার পর হঠাৎ করে যুবলীগ নেতাদের সাথে চলাফেরা শুরু করেন। এমন কি জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতার আর্শিবাদ পুষ্ট বলে জানান তারা। বর্তমানে এনাম বিভিন্ন স্থানে নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবি করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। তার ভাই আল আমিন শহর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। পর্যটন এলাকায় এমন কোন অপরাধ নেই যা সে করে না। এনামের হেফাজতে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছন স্থানীয়রা।

পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, এনামের বিরুদ্ধে ডাকাতি, অস্ত্র, মাদক, দখলসহ ৬টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র আইনের ধারায় দায়ের করা মামলা নং জিআর-২০৩/২০১৪, একই থানায় দায়ের করা হত্যা মামলা জিআর ৩৬৪/২০১৩, অস্ত্র আইনের ধারায় দায়ের করা মামলা জিআর নং-৯১৪/১৫, জিআর ৪৭০/১১, থানার এফআই আর নং ৭০/১১ এবং হত্যা চেষ্টা মামলা জিআর ৬/১৩ বিচারাধীন রয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দে বলেন, গ্রেফতার এনামের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, মাদক আইনেরসহ ছয়টি মামলা রয়েছে।

হোটেল-মোটেল জোনের পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, হোটেল জামান, পিংক শোর, হোটেল নিস্বর্গ, মেঘলা ও স্বপ্ন রিসোর্টসহ অন্তত ২০টি হোটেল দখল বেদখলের নেতৃত্ব দিয়েছেন এনাম। তাকে প্রতিহত করতে গেলে পেছনে ক্ষমতাধর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের নাম আসতো। তখন তার সামনে যেতো না কেউ। আর দখল করা এসব হোটেলে চলে ইয়াবার রমরমা বাণিজ্য। নিজেও ছিলেন মাদকাসক্ত। তার মাদক সেবনসহ অপরাধের বিভিন্ন স্থিরচিত্র “বাংলাদেশ পেপার” এর হাতে রয়েছে। সর্বশেষ ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে মঙ্গলাবার রাতে ২০ হাজার পিস ইয়াবা নিয়ে র‌্যাব-১৫ এর হাতে আটক হন এনাম।

নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবি করলেও যুবলীগের সাথে এনামের কোন সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন কক্সবাজার জেলা যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহমেদ বাহদুর।

র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী বলেন, মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে ঝিলংজার লিংকরোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ এবামকে গ্রেফতার করা হয়। জিঙ্গাসাবাদে এনাম টেকনাফ থেকে ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করার কথা স্বীকার করেছে। জব্দ ইয়াবাসহ তাকে সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, এনামের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যেসব অভিযোগ উঠেছে তার সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা