তিন ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে দুপুর সোয়া ১২টায় মাকে নিয়ে কুমিল্লাগামী একটি মাইক্রোবাসে চড়ে বসে জাহিদ। শিমরাইল মোড় থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরের কুমিল্লা বিশ্বরোড পর্যন্ত জনপ্রতি তাদের ভাড়া গুনতে হবে ১ হাজার ২০০ টাকা।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জাহিদ ও আমেনার মতো হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা গেছে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে স্বাভাবিকের চেয়ে ছয় থেকে সাত গুণ ভাড়ায় ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাসে গন্তব্যে রওনা হয়েছে। কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে রওনা হয়েছে মালবাহী লরি ও কাভার্ড ভ্যানে। জনপ্রতি দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা ভাড়ায় মোটরসাইকেলগুলোতে অনেকেই গন্তব্যে রওনা হয়েছে।
অন্যান্য দিনের তুলনায় বুধবার যাত্রীর চাপ বেশি ছিল। সে তুলনায় পরিবহন ছিল হাতেগোনা। চট্টগ্রাম ও সিলেট সড়কে চলা বাসগুলো এলাকা ভেদে জনপ্রতি ৬০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ এবং মাইক্রোবাসগুলো ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা ভাড়া নিয়েছে।
সোমবার এসব বাসে গন্তব্যে যেতে ১৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসগুলোতে ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছিল যাত্রীদের।
নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে রওনা হওয়া পোশাকশ্রমিক হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় কাঁচপুর সেতুর পূর্ব পাশে। আপাতত জনপ্রতি ৬০০ টাকা ভাড়ায় একটি পিকআপ ভ্যানে দাঁড়িয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন। বাকি পথ কীভাবে যাবেন জানা নেই।
দুই ছেলে আর স্ত্রীসহ ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন মুদি ব্যবসায়ী আলী হোসেন। আড়াই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে একটি পণ্যবাহী ট্রাকের পেছনে চড়ে বসেছেন। ভৈরব পর্যন্ত তাঁকে জনপ্রতি ৫৫০ টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
দুপুরে মদনপুর মোড়ে কথা হয় কুমিল্লার ভবের চরের বাসিন্দা আবুল ফজলের সঙ্গে। পরিবারের তিন সদস্য নিয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছেন। ঢাকা থেকে মদনপুর আসতেই তিনবার গাড়ি পাল্টেছেন তিনি। আবুল ফজল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে এক গাড়িতেই বাড়ি যাওয়া যেত। এখন চার–পাঁচবার গাড়ি পাল্টাতে হবে। এতে বেশি মানুষের সঙ্গে মিশতে হচ্ছে, করোনার ঝুঁকিও বাড়ছে। এ দেশের মানুষ ঈদের সময় যেকোনো উপায়ে বাড়ি যেতে চায়। যারা নিয়ম তৈরি করে, তারা কী বিষয়টা জানে না, এভাবে মানুষের বাড়িফেরা ঝুঁকি বাড়াচ্ছে না কমাচ্ছে?’