বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

নারী হয়ে উঠুক শক্তির প্রতীক

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-০৩-১৯ ১২:২৬:০৩  

‘নারী’ শব্দটি উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথে আমাদের সামনে ভেসে উঠে মমতাময়ী মায়ের প্রতিচ্ছবি যার মাধ্যমেই আমরা পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়েছি। সেই অপার মমতার অধিকারী নারীদের কে কেন্দ্র করেই পালিত হয় নারী দিবস যদিও এর পেছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস।

অমিত সম্ভাবনার অধিকারী নারী শক্তির যথাযথ বিকাশ সম্ভব হয়না নূন্যতম সুযোগ এবং যথাযথ মুল্যায়নের অভাবে। পুরুষশাসিত সমাজে অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের ছোট করে দেখা হয়। দমিয়ে রাখা হয় তাদের দিগ্বিজয়ী শক্তিকে, তাদেরকে সম্মুখীন হতে হয় অনেক সহিংসতার।

নারীদের প্রতি এইসব অবিচার প্রতিরোধ করে ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই নারী দিবস পালনের মূল বিষয়।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, নারী দিবস পালনের সূত্রপাত ঘটে ১৮৫৭ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে। নারী শ্রমিকদের কর্মঘন্টা কমিয়ে ৮ ঘণ্টায় আনা, ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ সহ কর্মপরিবেশের উন্নয়ন -এরূপ দাবিতে নারী শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেছিলেন পরবর্তীতে তা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

এরই ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘ ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি প্রতিবছর পালিত হয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার সাম্যবাদী কাব্যগ্রন্থের নারী কবিতায় বলেছেন, ‘সেদিন সুদূর নয়, যেদিন ধরণী পুরুষের সাথে গাহিবে নারীরও জয়!’

ধরণীতে নারীদের জয়গান গাওয়া হলেও এখনো প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখনোও নারীরা নিজগৃহে অত্যাচারের মুখোমুখি হয়, এখনোও তাদের সহ্য করতে হয় মানসিক যন্ত্রণার।

যেই নারীরা নিজ পরিবারের কথা চিন্তা করে জীবন ত্যাগ করতে পারে তারাই পরিবার সহ সামাজিকভাবে প্রাপ্য সম্মান পায়না। নারীশ্রমিকদের এখনো আমাদের দেশে ছোট করে দেখা হয়, তারা তাদের ন্যায্য মজুরিও পায়না।

এভাবেই বহুকাল থেকে নারীরা বৈষম্যের সম্মুখীন হয়। এখনো তাদের যৌতুক নামক সামাজিক ব্যাধির শিকার হতে হয়। এখনো খবরের পাতায় ধর্ষণের খবর অহরহ প্রকাশিত হয় অর্থাৎ নারীদের নিরাপত্তা প্রদান এখনো সম্ভব হয়নি। এইসব বৈষম্যতা দূরীকরণে সকলকে আহ্বান করাও নারী দিবস পালনের প্রতিপাদ্য।

বর্তমানে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ইতিবাচক হিসেবে দেখা হয়না। আমাদেরকে প্রথমেই সেই মানসিকতা দূর করতে হবে, পুরুষদের অংশগ্রহণ এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জরুরি।

শুধুমাত্র নারী দিবসে নয় নারীদের প্রতি সম্মান ও সমতার বিষয়টি বছরের প্রতিটি দিনে প্রতিফলিত করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে সমাজের যেই স্তরে নারীদের প্রতি সহিংসতা বেশি সেখানে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

গ্রামাঞ্চলে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। নারীরা আলোকিত হয়ে উঠুক নিজ শক্তিতে, আলোকিত করুক সমাজ ও পৃথিবীকে, নিজ উদ্যমে জয় করুর সাফল্যের প্রতিটি চূড়া -নারী দিবসে এটিই কাম্য।

নাজিয়া আফরিন- শিক্ষার্থী, ফার্মেসী বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা