বাংলাদেশ, , শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্ট্রোক কী? হলে কী করবেন?

বাংলাদেশ পেপার ডেস্ক ।।  সংবাদটি প্রকাশিত হয়ঃ ২০২১-০৩-১৬ ০০:৪৩:১২  

স্ট্রোক কী?

স্ট্রোক হল মস্তিষ্কের রক্তনালির একটি রোগ। সেই রক্তনালি ছিঁড়ে যাওয়া অথবা ব্লক হয়ে যাওয়া স্ট্রোকের কারণ।

অতএব স্ট্রোক দু’ধরনের-
১. রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ। একে বলে হেমোরেজিক স্ট্রোক।
২. রক্তনালি ব্লক হয়ে গিয়ে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত না যাওয়া এবং ওই অংশের শুকিয়ে যাওয়া। একে বলে ইস্কেমিক স্ট্রোক।

কেন স্ট্রোক হয়?

সাধারণত কিছু ক্ষেত্রে অনেকদিন ধরে ধীরে ধীরে বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হাই-প্রেসার, হাই-কোলেস্টেরল, ধূমপান, পারিবারিক স্ট্রোকের ইতিহাস, হার্টের অসুখ যেমন- অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, রক্তজমাট বাঁধা অসুখ, ক্যান্সার ইত্যাদি আরও অনেক কারণ রয়েছে স্ট্রোকের।

আবার অনেক সময় কোনো পূর্ব রোগ ছাড়াও হঠাৎ করেই হতে পারে স্ট্রোক। এক্ষেত্রে হঠাৎ উত্তেজিত হওয়া, জন্মগত রক্তনালির গঠনগত সমস্যা, জন্মগত এনজাইমের সমস্যা, মেটাবলিক সমস্যা ইত্যাদি রয়েছে।

তাই শুধু বয়স্কদের নয়, একেবারে তরুণদের মধ্যেও স্ট্রোক হতে দেখা যায়।

স্ট্রোকের লক্ষণ কী?

সবসময় সবধরনের স্ট্রোকের একই রকম লক্ষণ হয় না। কী ধরনের স্ট্রোক, কী কারণে হল, মস্তিষ্কের কোন অংশে হল তার ওপর ভিত্তি করে লক্ষণও হতে পারে ভিন্ন।

হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ায়ও যেমন স্ট্রোক হতে পারে, তেমনই শরীরের কোনো অংশ ধীরে ধীরে দুর্বল বা অবশ হয়ে যাওয়া, ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়া, মুখ একদিকে বাঁকিয়ে যাওয়া, মুখ থেকে খাবার ও পানি গড়িয়ে পড়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন যেমন- চিনতে না পারা, অপ্রাসঙ্গিক বা আজেবাজে কথা বলা, অকারণে বিরক্ত হয়ে হইচই করা, একদম চুপচাপ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

এগুলো হওয়া মানেই যে স্ট্রোক- এমনটি নয়। আরও অনেক কারণেই এমন হতে পারে। তবে এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

স্ট্রোক হলে কী করণীয়?

পরিবারের কারো এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ভয় ও উদ্বিগ্ন লাগাটা স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে আপনার প্রথম ও প্রধান করণীয় রোগীকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব অ্যাম্বুলেন্স ডাকা এবং হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করা।

কোনো ধরনের ওষুধপত্র নিজ থেকে দিবেন না। কারণ স্ট্রোকটি হেমোরেজিক না ইস্কেমিক আপনি জানেন না, ওষুধ প্রদানে উল্টা তার ক্ষতি হতে পারে। মুখে কিছু খাওয়াতে যাবেন না, এমনকি পানিও।

এ খাবার ও পানি তার শ্বাসনালিতে গিয়ে আটকে যেতে পারে ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে অথবা ইনফেকশন করতে পারে, যা এ অবস্থায় তার জন্য খুবই ক্ষতিকর। আর ওই যে ভাইরাল পোস্টে পড়েছেন সুই দিয়ে আঙ্গুল ফুটো করে দেয়া- সেটি ভুলেও করবেন না।

এতে রক্তক্ষরণ থেকে রোগী আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে, ক্ষতের জায়গায় ইনফেকশন হয়ে রক্তে ছড়িয়ে সেপটিসেমিয়া হয়ে যেতে পারে এবং আমাদের শরীরের ডিফেন্স মেকানিজমে রক্তনালি সংকুচিত হয়ে স্ট্রোকের ফলাফল আরও খারাপ হতে পারে।

স্ট্রোকের চিকিৎসায় যেই হাড় ছিদ্র করে বারহোল সার্জারির কথা বলা হয়েছে, অনেকে এর সঙ্গে হাতে সুই ফোটানোকে গুলিয়ে ফেলেছে। বারহোল করে মস্তিষ্কের জমাটরক্ত সরানো হয়, যা মস্তিষ্কের একটি অংশে চাপ দিচ্ছে।

হাত, পা, কান ফুটো করে কয়েক লিটার রক্ত বের করেও এ জমাটরক্ত কমানোর কোনো পথ নেই। যদি বের করতেই হয় তবে মাথার হাড়ই ফুটো করতে হবে এবং এ ডিসিশন একমাত্র আপনার চিকিৎসকই দিতে পারেন।


পূর্ববর্তী - পরবর্তী সংবাদ
       
                                             
                           
ফেইসবুকে আমরা